বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ হাসানকে ‘গুম’ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন সমন্বয়ক আব্দুল কাদের।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি এমন দাবি করেন। এর আগে চার দিন নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ফিরেন খালেদ হাসান। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে তার কক্ষে নিয়ে যান।
খালেদ হাসান ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারছেন না মন্তব্য করে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, আমি তার সাথে একান্তে কথা বলতে চাইলে সে আমাকে তার গুম হওয়ার ঘটনা জানায়। তার ভাষ্যমতে- শুক্রবার বিকেলের দিকে টিএসসি থেকে রিকশায় করে দোয়েল চত্বরের দিকে যাবার সময় রিকশাতেই অজ্ঞাত কারণে সে জ্ঞান হারায়। পরবর্তীতে সে যখন জ্ঞান ফিরে পায় সে নিজেকে সুনামগঞ্জের একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে মাইক্রোবাসে দেখতে পায়। এ সময় তারসাথে আরও ২-৩ জন ছিল।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে সে আবারও জ্ঞান হারায়। দ্বিতীয়বার যখন খালেদ জ্ঞান ফিরে পায় তখন সে নিজেকে পঞ্চগড়ের কোনও একটা জায়গায় দেখতে পায়। তখনও মাইক্রোবাস চলমান ছিল। তৃতীয়বার মঙ্গলবার যখন তার জ্ঞান ফিরে আসে, তখন সে নিজেকে বরিশালের এক রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে কেউ একজন গাড়িতে তুলে দিলে সে ঢাকা পৌঁছে হলে ফিরে আসে।
কেন্দ্রীয় অন্যতম এই সমন্বয়ক আরও বলেন, খালেদের মানসিক অবস্থা ভালো না। কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে এসেছি।
জানতে চাইলে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ বলেন, আমি খালেদের সাথে কথা বলেছি, সে কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু ভয়ে বলতে পারছে না। তাকে খুব দুর্বল দেখাচ্ছে। পরে আমি ডাক্তার নিয়ে আসলে তার ব্লাড প্রেশার বেড়েছে বলে ডাক্তার জানায়। এখন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সুস্থ হলে সে সবাইকে ঘটনার বিস্তারিত বলতে পারবে।
উল্লেক্য, গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাবির সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে বের হয়ে আর ফিরেনি। ছেলের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় চষে বেড়ান বাবা। পরিবারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মেলেনি খালিদের সন্ধান। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় তার বাড়ি। তিনি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
এনএ/