বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় দেশে পাঠালে প্রতি ১০০ টাকায় প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি আরো আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি পাবেন প্রবাসীরা।
রোববার (২২ অক্টোবর) থেকে নতুন এ নির্দেশনা কার্যকর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে ডলারপ্রতি বৈধ চ্যানেলে ১১৬ টাকা করে পাবেন প্রবাসীরা।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বাফেদা ও এবিবির এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রেমিট্যান্স কিনতে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ও সরকারের দেয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত আরো আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি দিয়ে রেমিট্যান্স কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো।
বর্তমানে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকে এক মার্কিন ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এর ওপর সরকার ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়। তাতে এক ডলারে পাওয়া যেত প্রায় ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। এখন এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো দিবে আরও আড়াই শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা। ফলে এখন থেকে প্রবাসীরা এক ডলারে পাবেন ১১৬ টাকার বেশি অর্থ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত। তাদের ধারণা নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরো আগ্রহী হবে।
নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করছে সরকার। তারপরও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি মাসের প্রথম ১৩ দিনে দেশে ৭৮ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা ছিল বিগত ৪১ মাসে সর্বনিম্ন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, আগস্ট মাসে দেশে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল আর জুলাই মাসে আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাইতে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার, মার্চে ২০২ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার, মে মাসে ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ও জুন মাসে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৫৭ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার কম।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এনএ/