মানুষের জন্য তিনটি কাজ তাড়াতাড়ি করা আবশ্যক। মৃতব্যক্তির দাফন-কাফন এ তিনটির একটি। যদি কোনো মানুষ মারা যায়, বিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব দাফন-কাফন করা জরুরি।
জানাজা, দাফন-কাফন ইত্যাদি জীবিতদের ওপর মৃত ব্যক্তির অধিকার। রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা দ্রুত জানাজার নামাজ পড়ে লাশ দাফন করো। কেননা যদি মৃত ব্যক্তি পুণ্যবান হয়, তবে তোমরা ‘ভালো'-কে দ্রুত কবরে সমর্পণ করো, আর যদি অন্যরূপ হয়, তাহলে ‘মন্দ'-কে দ্রুত তোমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দাও।’ (বুখারি: ১৩১৫; আবু দাউদ: ১/১৫৮)
দাফন শেষে কবরের পাশে অবস্থান করে নিচের আমলগুলোর কথা হাদিসে এসেছে—
১. মৃতের মাগফেরাতের জন্য এবং কবরের সওয়ালের জওয়াবে অটল থাকার জন্য দোয়া করা।
হজরত উসমান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. যখন মৃতের দাফনকার্য সম্পন্ন করতেন তখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য মাগফেরাত কামনা করো এবং (সওয়ালের-জওয়াবে) অটল থাকার জন্য দোয়া করো। কেননা এখনই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুনানে আবু্ দাউদ: ৩২২৩)
দোয়াটি এভাবে করা যায়—
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ، اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ
উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মাগফির লাহু, আল্লা-হুম্মা সাববিতহু।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন, হে আল্লাহ আপনি তাকে (প্রশ্নোত্তরের সময়) স্থির রাখুন।’
২. মৃতের মাথার দিকে অবস্থান করে সুরা বাকারার শুরু এবং শেষের কিছু অংশ তেলাওয়াত করা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. লাশ দাফনের পর তার মাথার দিকে অবস্থান করে সুরা বাকারার শুরু এবং শেষের অংশ পড়া পছন্দ করতেন। (সুনানে বায়হাকি: ৪/৫৬)
উল্লেখিত হাদিস অনুযায়ী, সংক্ষেপে আলিফ লাম মিম থেকে উলা-ইকা হুমুল মুফলিহুন পর্যন্ত এবং শেষের দিকে আমানাররাসুল থেকে ফানসুরনা আলাল কাউমিল কাফিরিন পর্যন্ত পড়তে পারেন অথবা চাইলে শুরু ও শেষের দিকে আরও বাড়িয়েও পড়তে পারেন।
প্রসঙ্গত, কবর সামনে রেখে দুহাত তুলে দোয়া করা শোভনীয় নয়। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কেবলামুখী হয়ে দোয়া করা উচিত। আবার কেউ চাইলে হাত না তুলে মনে মনেও দোয়া করতে পারেন। (ফাতোয়ায়ে আলমগিরি: খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫০, কিতাবুল কারাহিয়্যা)
এনএ/