রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ ।। ৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

মেয়াদ বাড়বে যুদ্ধবিরতির , প্রত্যাশা হামাসের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতি বাড়ানো নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার ও মিসর। তবে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

দেড় মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলার পর গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো গাজায় শুরু হয় চার দিনের যুদ্ধবিরতি । প্রথম দফা শেষে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়াতে একমত হয় দুই পক্ষ। এরপর গত মঙ্গলবার শুরু হয় আরও দুই দিনের যুদ্ধবিরতি।

গতকাল ছয় দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগেই কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় মেয়াদ আরও বাড়ানোর আলোচনা শুরু হয়। এ আলোচনা চলমান ছিল গতকাল রাত পর্যন্ত।

যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছে হামাস। হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য গাজি হামাদ গতকাল রাতে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো হলে আমরা আরও জিম্মি মুক্তি দিতে প্রস্তুত। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাতারি ও মিসরীয় ভাইদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চলছে। আশা করছি আজই নতুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এ যুদ্ধবিরতি হতে পারে আরও কয়েক দিনের।’

ফিলিস্তিনের একজন কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর ব্যাপারে দুই পক্ষই আগ্রহী। তবে এখনো এ নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় আলোচনা এখনো চলমান।

এদিকে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি গতকাল বলেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে যেকোনো প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে ইসরায়েল। যদিও তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

তেল আবিবে সাংবাদিকদের আইলন লেভি বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্ত করে আনার জন্য আমরা যা করা যায়, তার সবই করব।’ যুদ্ধবিরতি বাড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়লেও গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটছে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েল সরকারের এই মুখপাত্র। আইলন লেভি বলেন, ‘সব জিম্মি মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর আবার লড়াই শুরু হবে। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মধ্য দিয়েই সমাপ্তি ঘটবে এই যুদ্ধের।’

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গতকাল বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে যা করা দরকার, সবই আমরা করার চেষ্টা করছি। কারণ, যুদ্ধ বন্ধ থাকলে আরও বেশি জিম্মি মুক্ত করে আনা যেমন সম্ভব হবে, তেমনি গাজায় আরও বেশি পরিমাণ মানবিক ত্রাণসহায়তা পাঠানো যাবে।’

ছয় দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গতকাল রাত পর্যন্ত হামাস ৮১ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের কারাগার ও বন্দিশিবিরগুলো থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৮০ জন ফিলিস্তিনি।

এদিকে কাতার সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের গোয়েন্দাপ্রধান। গত মঙ্গলবার মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক উইলিয়াম বার্নস এবং মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়ার কাতার যাওয়ার বিষয়টি গতকাল জানা যায়।

দুই মিত্রদেশের গোয়েন্দাপ্রধান কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। গাজায় যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মিসরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র বলছে, নারী ও শিশুর পাশাপাশি হামাস যেন পুরুষ ও সেনাসদস্যদেরও মুক্তি দেয়, তা নিশ্চিত করাসহ নতুন ধাপে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েক দিনের যুদ্ধবিরতি না হয়ে টেকসই যুদ্ধবিরতির ব্যাপারেও আলোচনা করেছেন তাঁরা।

গাজায় যে যুদ্ধাপরাধ করেছে এর জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে ইসরায়েল বিচার করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক ফোনালাপে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে এ আহ্বান জানান।

যুক্তরাষ্ট্র সময় গতকাল গাজা নিয়ে বৈঠকে বসবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলো। এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিবকে ফোন করে এমন আহ্বান জানিয়েছেন এরদোয়ান।

জেএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ