আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিশ্ব মুসলিমদের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফ। সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত, ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান মাসজিদুল হারাম। মসজিদের কেন্দ্রে কাবার অবস্থান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কখনো থামেনি কাবার তাওয়াফ। ঘড়ির কাটার বিপরীতে চলছে পবিত্র গৃহের প্রদক্ষিণ কার্যক্রম।
কাবা অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ অত্যন্ত বিরল। আনুষ্ঠানিক পরিচ্ছন্নতার জন্য বছরে মাত্র ২ বার খোলা হয় পবিত্র ঘরের দরজা। কেমন দেখতে ভেতরের দৃশ্য, সেটি নিয়ে তাই আগ্রহের কমতি নেই।
কালো রঙের পর্দায় ঢাকা থাকে পবিত্র কাবার ইমারত। উপরের আচ্ছাদন বা গিলাফকে বলা হয় কিসওয়া। একটি কিসওয়া তৈরিতে প্রয়োজন পড়ে ৬৭০ কেজি রেশম ও ১৫ কেজি স্বর্ণ। কিসওয়াতে ব্যবহৃত সিল্ক আসে ইতালি থেকে। জার্মানি থেকে আনা হয় সোনা-রূপার প্রলেপ দেয়া সূতা। এতে মোট খরচ হয়ে থাকে ৫০ কোটি টাকার বেশি।
নির্মাণের সময় কাবার কোনো দরজা ছিল না। ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় ছিলেন বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজ। তার আদেশে তৈরি হয় কাবা শরীফের বর্তমান দরজা।
১০ সেন্টিমিটার পুরত্বের বিশ্বের সবচেয়ে দামি কাঠে তৈরি দরজায় ব্যবহার হয়েছে ২৮০ কেজির খাঁটি সোনা। খোদিত আছে পবিত্র কোরানের বিভিন্ন আয়াত। ইসলামপূর্ব যুগ থেকে একই পরিবারের সদস্যরা পালন করে আসছেন কাবার চাবি বহনের গুরুদায়িত্ব।
কাবা অভ্যন্তরে একপাশে রয়েছে একটি ছোট সোনার দরজা। নাম বাবুত ত্বাওবা। এই দরজা দিয়ে কাবার ছাদে যাওয়া যায়। শুরুতে কাবার কোনো ছাদ ছিল না। কোরাইশ বংশের সংস্কারের সময় ছাদ সংযুক্ত করা হয়। ইমারত অবকাঠামো মজবুত করতে মূল ছাদ ছাড়াও পরবর্তীতে যোগ করা হয়েছে ১টি বাড়তি ছাদ।
কাবার ভেতরে রয়েছে আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাদিয়াল্লাহ আনহুর স্থাপিত ৩ টি স্তম্ভ। স্তম্ভগুলোকে পরবর্তীতে সুসজ্জিত করা হয়েছে স্বর্ণখঁচিত ডিজাইনে। খুঁটি তিনটিতে ঝুলে আছে নানা রকম প্রদীপমালা। এসব শামাদান ইতিহাসখ্যাত রাজা-বাদশাহ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে উপহার।
সবুজ এবং সাদা মার্বেল পাথরের দ্বারা আবৃত কাবা ঘরের ভেতরের দেয়াল। রয়েছে সুগন্ধি রাখার একটি বহুমূল্য বাক্স। দেয়ালে আছে বিভিন্ন সময়ে কাবা সংস্কারে বাদশাহদের ভূমিকা ও কাজের ফিরিস্তি।
কাবা গৃহের অভ্যন্তরে চিহ্নিত করা আছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামাযের জায়গা। পাশের দেয়ালে মার্বেল পাথরের ওপর খুত্তুল কুফি বা কুফি বর্ণমালায় অঙ্কিত আছে কালিমার ক্যালিগ্রাফি।
বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীক পবিত্র কাবা ঘর। রাষ্ট্রীয় মেহমানদের অনেকের হয় কাবা শরীফে প্রবেশের সৌভাগ্য। দূর অতীতে সপ্তাহে ২ বার খোলা হলেও বর্তমানে বন্ধ সেই সুবিধা। কাবা অভ্যন্তরের চিত্র দেখার জন্য তাই, ভার্চুয়াল ভ্রমণেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের। সূত্র: আল অ্যারাবিয়া নিউজ।
-এটি