আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইসলাম হলো— শান্তি, সৌহার্দ, ভালোবাসা, সহমর্মিতা, সহিষ্ণুতা ও ভাতৃত্বের পরিপূর্ণ এক জীবনাদর্শ। ইসলামের মধ্যপন্থা ও উদারতার আদর্শকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া নবীজির পক্ষ থেকে অর্পিত দায়িত্ব। এ জন্য তরুণ আলেমদের সব মত পথের ঊর্ধ্বে উঠে দাওয়াতি মানসিকতায় এক হতে হবে। নতুন প্রজন্মের সামনে পূর্ণভাবে ইসলামের সঠিক শিক্ষা তুলে ধরা সময়ের অপরিহার্য দাবি। তাই মতাদর্শকেন্দ্রিক বিরোধে না জড়িয়ে সবার মধ্যে ইসলামের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এখন তরুণ প্রজন্মের আলেমদের প্রধান দায়িত্ব।
বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে দেশের বরেণ্য আলেমরা এসব কথা বলেন।
শনিবার রাজধানীর পল্টনের হোটেল রয়েল প্যালেসে সদস্য, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরামের সম্মানে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সেবামূলক এ সংগঠনটি।
বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের আহ্বায়ক তানজিল আমিরের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকীর পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, সেগুনবাগিচা মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, দ্বীনিয়াত বাংলাদেশের পরিচালক মুফতি সালমান আহমদ, খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা শারাফাত হুসাইন, দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, আহছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজমের সহকারী অধ্যাপক মুফতি শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী।
অনুষ্ঠানে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, সম্প্রীতি ও উদারতা ইসলামের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। তরুণ প্রজন্মের আলেমদের এ বিষয়টি বিষেশভাবে মেনে চলতে হবে। কারণ সহমর্মিতা ও সৌহার্দের পরিবেশ ছাড়া বিস্তৃতভাবে দ্বীনের কাজ করা সম্ভব হয় না। সময়ের বাস্তবতা ও যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ আলেমদের এখন সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়তে হবে। তাই কোনো মতাদর্শকেন্দ্রিক চিন্তায় আবদ্ধ না থেকে সবার মাঝে দ্বীনি চেতনা বিস্তারে কাজ করতে হবে।
দ্বীনিয়াত বাংলাদেশের পরিচালক মুফতি সালমান আহমদ বলেন, মানুষের অন্তরে জায়গা পেতে আগে নিজের অন্তরে সবাইকে স্থান দিতে হয়। বর্তমানে শুধু বিভক্তি আর বিভাজনে সবাইকে উৎসাহী দেখা যায়। তাই উম্মতের মাঝে সহিষ্ণুতা ও ভ্রাতৃত্বের ব্যাপক চর্চা করতে হবে। তরুণ আলেমদের অন্তরে সবার জন্য বিশেষ ভালোবাসার স্থান থাকতে হবে, তা হলে সবাই আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকী বলেন, সব দল ও মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে কওমি ছাত্রদের নিয়ে বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য করাই বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমাদের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বৃহত্তর ঐক্যের জন্য প্রয়োজন মনস্তত্ত্বিক ঐক্য গড়ে তোলা। তা হলেই দীর্ঘস্থায়ী একটা ঐক্য গড়া সম্ভব। যেটিকে বলা যায় বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যের সুর।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) সেবা সংস্থার চেয়ারম্যান মাওলানা রজীবুল হক, ইসলামি লেখক ফোরামের সভাপতি মাওলানা মুনিরুল ইসলাম, আল মারকাজুল ইসলামি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাওলানা হামজা শহিদুল ইসলাম, জাতীয় লেখক পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল গাফফার, ইনসাফ ২৪.কমের সম্পাদক সাইয়্যেদ মাহফুজ খন্দকার, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মাওলানা এমদাদ বিন সায়েনুদ্দীন, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মাওলানা যোবায়ের গণীসহ দেশবরেণ্য আলেম, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও গবেষকবৃন্দ।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা এহতেশামুল হক সাখী, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা সানাউল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা এমদাদু্ল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ ফাহিম, সাংগঠনিক সচিব কাজী আব্দুল্লাহ, দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাওলানা সাজিদ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
এনটি