আওয়ার ইসলাম ডেস্ক:মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে মৌলভীবাজার থেকে এক নারীকে ঢাকায় এনে ধর্ষণের অভিযোগে মানবপাচার চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী মুঠোফোনে র্যাবের সহায়তা চান। অভিযোগ পেয়ে গত বুধবার রাতে ঢাকার রামপুরা থেকে ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও টিকেট, জাল ভিসা ও টিকেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানবপাচার ও প্রতারক চক্রের মূলহোতা কামরুল আহম্মেদ (৪২), তার সহযোগী মো. খালেদ মাসুদ হেলাল (৩৬), তোফায়েল আহম্মেদ (৩৮) ও মো. জামাল (৪২)
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তোফায়েল আহম্মেদ ও ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি একই এলাকায়। তিনি ওই নারীকে সৌদি আরবে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি ওই নারীকে বলেন, দেশের বাইরে যেতে হলে ভাষা শিখতে ঢাকায় যেতে হবে। পরে মৌলভীবাজার থেকে ঢাকার রামপুরায় চক্রের আরেক সদস্য কামরুল আহম্মেদের বাসায় এনে তোফায়েল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তোফায়েলসহ ওই চারজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক বলেন, তাদের জনশক্তি রপ্তানির কোন লাইসেন্স নেই। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে ভ্রমণ ভিসার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক প্রেরণ করে আসছে।
এছাড়াও উক্ত চক্র মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে জনশক্তি প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে ৫-৭ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভুয়া ভিসা এবং ভুয়া টিকেট ধরিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগীরা উক্ত ভিসা এবং টিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে গেলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উক্ত ভিসা এবং টিকেট জাল হওয়ায় বিমানবন্দর হতে ফিরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে প্রতিকার চাইলে আসামিরা তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে বাসার ঠিকানা পরিবর্তন করে ফেলে। এভাবে গত ২ বছরে আসামিরা আটবার তাদের বাসার ঠিকানা পরিবর্তন করে।
গত ৫ বছরে তারা অবৈধভাবে শতাধিক লোককে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে। যারা বিদেশ গিয়ে কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চক্রটি শতাধিক লোককে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ভিসা ও ভুয়া টিকেট সরবরাহ করে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এনটি