মুযযাম্মিল হক উমায়ের।।
প্রিয় ভাইয়েরা! যারা নিজেদের নফসের কথা মেনে জীবন পরিচালনা করে। আল্লাহ তায়ালার জিকির থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখে। আল্লাহ তায়ালা তাদের সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ
এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করবো।
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرۡتَنِيٓ أَعۡمَىٰ وَقَدۡ كُنتُ بَصِيرٗا সে বলবে, হে আমার পালনকর্তা! আমাকে কেনো অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম।
قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتۡكَ ءَايَٰتُنَا فَنَسِيتَهَاۖوَكَذَٰلِكَ ٱلۡيَوۡمَ تُنسَىٰ আল্লাহ তায়ালা বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিলো, অতপর তুমি সেগুলি ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হবে। সুরা তোয়া—হা: আয়াত—১২৪—১২৬
অর্থাৎ, যারা আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে এই ধোঁকাবাজ দুনিয়ার মোহে পড়ে জীবন যাপন করবে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি তার জীবিকার পথ সংকীর্ণ করে দিবো। তার বুক সংকীর্ণ হয়ে যাবে। তার অন্তর বন্ধ হয়ে যাবে। সে বাস্তব সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। তার আঁচল কখনো তাজা গোলাপের সুঘ্রাণ দ্বারা সিক্ত হবে না।
সে সর্বদাই কাগজের গোলাপকে ফুলের গোলাপ মনে করে সুঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। সে বড়ই গাছের পাতা দ্বারা নিজেকে মেহেদী পাতার রঙে রঙীন করতে চাইবে। মরুভূমিকে ফুলের বাগান মনে করে নিজের মনকে ধেঁাকা দেওয়ার চেষ্টা করবে। সে কখনো মূল লক্ষ্য ও গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না।
মোটকথা, যে ব্যক্তি নিজের নফসের চাহিদা পুরা করার জন্য নিজের জীবনকে মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পরিণত করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে অল্প সময়ের জন্য তাকে দুনিয়ার উপভোগের সামগ্রী প্রদান করবেন।
আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيۡهِمۡ أَعۡمَٰلَهُمۡ فِيهَا وَهُمۡ فِيهَا لَا يُبۡخَسُونَ যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, আমি দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল পুরাপুরি দিয়ে দিবো। এবং এতে তাদের প্রতি বিন্দু পরিমানও কমতি করা হয় না।
أُوْلَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيۡسَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ এরাই হলো সেসব লোক, পরকালে যাদের জন্য আগুন ছাড়া অন্য কিছু নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিলো, সবই বরবাদ হয়ে গেছে এবং যা কিছু উপার্জন করেছিলো, সবই বিনষ্ট হয়ে গেছে। সুরা হুদ: আয়াত—১৫—১৬
مَّن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعَاجِلَةَ عَجَّلۡنَا لَهُۥ فِيهَا مَا نَشَآءُ لِمَن نُّرِيدُ ثُمَّ جَعَلۡنَا لَهُۥ جَهَنَّمَ يَصۡلَىٰهَا مَذۡمُومٗا مَّدۡحُورٗا যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি তাকে যা ইচ্ছা সত্ত্বর দিয়ে দিই। অতপর তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করি। সে তাতে নিন্দিত—বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। সুরা বনি ইসরাঈল: আয়াত—১৮
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি দুনিয়াতেই সবকিছু পাওয়ার কামনা করে, তখন আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সেই পথ উন্মুক্ত করে দেন। তখন তার কাছে অবিরাম দুনিয়া আসতে থাকে। আর এতে কোন কিছুর কমতি হয় না। তবে অবশেষে কী হয়? অবশেষে মৃত্যুর পর জাহান্নামের আগুনে জ¦লতে হয়। যা সে দুনিয়াতে উপার্জন করেছিলো, সেগুলি দুনিয়াতেই পড়ে রয়েছে।
কেয়ামতের দিন সেগুলি কোন কাজে আসবে না। দুনিয়ার সমস্ত চেষ্টা—প্রচেষ্টা বাতিল হয়ে যাবে। ফলে দুনিয়া ও পরকাল উভয়টিকে নষ্ট করে অবশেষে জাহান্নামের লাকড়িতে পরিণত হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে পানাহ দান করুন। আমীন। সূত্র: মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের বয়ানের অনুবাদ
-এটি