মুযযাম্মিল হক উমায়ের।।
প্রিয় ভাইয়েরা! যদি এখানে কারো নিজস্ব কোন বাদশাহী চলতো, তাহলে কে কাকে বাদশাহী প্রদান করতো? কিন্তু আপনারা কবরস্থানে চলুন। সেখানে গিয়ে দেখুন! অনেক বাদশাহ মাটির সাথে মিশে আছে।
তারা ঘোষণা করতেছে; আমাদেরকে দেখুন! যাদের অন্তর চোখ খোলা আছে, তারা আমাদেরকে দেখুক। আমি এক সময় কারো উপর প্রভাব চালিয়েছিলাম।
রাজত্ব দেখিয়েছিলাম। ক্ষমতা দেখিয়েছিলাম। জোর—দখল করেছিলাম। আর এখন দেখুন! আমি চূর্ণ—বিচূর্ণ হাড্ডি নিয়ে অন্ধকার কবরে একা একা পড়ে আছি। হাড্ডিগুলি ভেঙে চূর্ণ—বিচূর্ণ হয়ে পড়ে আছে। চোখের স্থানে গভির গর্ত হয়ে আছে। নাকের স্থানে গর্ত।
অহংকারের স্থান মাথা, সেটি খালি খুলি। ভিতরে কিছু নেই। খুলি পৃথক পড়ে আছে। ছাঁচ আলাদা পড়ে আছে।
অহংকারে অত্যাচার করার অভিপ্রায়ে অগ্রসর হওয়া আঙ্গুলগুলির পাঞ্জা আলাদা পড়ে আছে। গোড়ালি দিয়ে সামানে অগ্রসর হওয়া পায়ের গোড়ালি আলাদা পড়ে আছে।
অহংকারে উত্তেজিত হয়ে গরিব—অসহায়দেরকে তুচ্ছ—তাচ্ছিল্য করার উদ্দেশ্যে লাথি দাতার রানের হাড্ডিগুলি আলাদা পড়ে আছে। কব্জি আলাদা পড়ে আছে। হাটু আলাদা পড়ে আছে।
অহংকারীর যে পাঁজরে অন্তর ছিলো, সেই অন্তর তো অনেক আগেই টুকরো টুকরো হয়ে শেষ হয়ে গেছে। পাঁজরের পাঞ্জাও ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে আছে।
প্রিয় ভাইয়েরা! পোকা—মাকড়ের রাজ্যে এমন অসংখ্য বাদশাহী কবরস্থ হয়েছে। তাদের হাড্ডিগুলি পড়ে আছে। পাঁজরগুলি পড়ে আছে। চোখগুলি পড়ে আছে। অনঢ়গল বলতে থাকা জিহ্বাসহ আরো যা যা আছে, সবগুলি নির্জন ও অন্ধকার কবরে নিথর পড়ে আছে।
সুতরাং বুঝা গেলো, এই সবকিছু হলো, ধোঁকা আর ধোঁকা। মশা—মাছির ডানার চেয়েও তুচ্ছ ও মূল্যহীন।
সূত্র: মাওলানা তরিক জামিলের এর বয়ানের অনুবাদ
-এটি