বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

জাতিকে মাদকাসক্ত করে ইসলামী শিক্ষা তুলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে: চরমোনাই পীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ৯৫ শতাংশ মুসলমানের দেশের স্কুল-কলেজ থেকে ইসলামী শিক্ষা তুলে দেয়াসহ সামগ্রীকভাবে ধর্মীয় তথা ইসলামী শিক্ষা সংকোচন এবং জাতিকে মাদকাসক্ত করতে মাদকের বিক্রয় সহজ করে দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

তিনি মাদকের বিস্তাররোধ ও ইসলামী শিক্ষা সংকোচনের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগামী ৩১ মার্চ ঢাকায় জাতীয় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, চট্টগ্রামের বই মেলায় ইসলামী বই নিষিদ্ধ করাসহ সরকারের অন্যান্য কর্মকান্ডে মনে হচ্ছে তারা বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতি চালুর অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে।

স্বপ্নের বাংলাদেশ আজ লুটেরা, সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজদের কবলে। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে এহেন বেহাল অবস্থা থেকে উদ্ধারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিপথগামী মানুষদের আত্মশুদ্ধি করার পাশাপাশি রাষ্ট্রশুদ্ধির কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে দেখা গেছে জনগণ আগে ভোট দিতে পারতো না,আর এখন প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতেও পারে না। এতে প্রমাণিত হয়,  দলীয় সরকারের অধীনে আগামীতে কোন সুষ্ঠ নির্বাচন হবে বলে মনে হয় না।

আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিলের ২য় দিনে আয়োজিত ওলামা-বুদ্ধিজীবি সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত কথা বলেন।

ওলামা-বুদ্ধিজীবি সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে হাতপাখাকে বিজয়ী করতে একযোগে সকলকে কাজ করতে হবে। কুরআন, হাদীসের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, কারাগারে বন্দী ওলামায়ে কেরামকে মুক্তি দিতে হবে।

হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর জামাতা ও লক্ষীপুরের চরকাদিরা ইউনিয়নে হাত পাখা প্রতিকে নির্বাচিত আলোচিত চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, সমগ্র দেশ দুর্নীতির অতল সাগরে ডুবে আছে। সরকারের দায়িত্বশীলরা স্বীকার করে সর্বত্র দুর্নীতি। ক্ষমতাসীনদের দিয়ে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, যে যত শিক্ষিত ও যত বড় পদের অধিকারী সে তত বড় দুর্নীতিবাজ।

শায়খ জাকারিয়া ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করা ফরজে আইন। কায়েম করা সম্ভব না হলে চেষ্টা করা ফরজে আইন।

সরকারে সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসলামী আন্দোলনের মাধ্যমে শক্তি সঞ্চয় করে কাজ করতে হবে। আমাদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সন্তানদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

জামেয়াতুস সুন্নাহ মাদারীপুরের মুহতামিম মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী বলেন, ধর্মের নাম দিয়ে ইসলামের বিরোধীতা করার কোন ধর্ম নেই, তাই ইসলাম বিরোধীরা ধর্মহীনতাকে দিয়ে ইসলামের মোকাবেলা করতে চায়। পৃথিবীর ২শ কোটি মুসলমান বিশ্বাস করে আল্লাহ ছাড়া কারো আইন মানি না। রাষ্ট্রীয়ভাবে, শিক্ষা ও বিচারের ক্ষেত্রে যা করছে তার সাথে কালেমার কোন সম্পর্ক নেই।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, এই দেশের নেতারা দুনিয়ার কথা বলেন। অনেক আলেম ওলামা আখেরাতের কথা বলেন। আর চরমোনাই পীর সাহেব দুনিয়া ও আখেরাতের কথা বলেন। বুলেটের বিপরীতে ব্যলট অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যালটের মাধ্যমে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় সর্বাত¥ক চেষ্টা চালাতে হবে।

আমার বাংলাদেশ পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মেজর অবঃ অধ্যাপক ডা. আবদুল ওহাব মিনার বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমাদের যে নাগরিক অধিকার পাবার কথা ছিলো, তা আমরা পাচ্ছি না।

ঢাকার শান্তি নগর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ফরিদউদ্দিন আল মোবারক চরমোনাই তরিকার বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দ্বীন ইসলামের স্বার্থে চরমোনাইর বিরোধীতা পরিহার করম্নন।

সাবেক সংসদ সদস্য ডা. আক্কাস আলী সরকার বলেন, দেশে ইনসাফ থাকলে ২ লক্ষ কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেট হওয়ার পরেও দেশের মানুষকে ভিক্ষা করতে হতো না। তিনি বলেন, ইসলামী হুকুমতের অনুপস্থিতিতে দেশে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানির ঘটনা ও দুর্নীতি অহরহ ঘটছে। চ

ট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও ঝালকাঠির ক্বায়েদ সাহেব রহ.- এর নাতি ড.মুহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ইসলামী শিক্ষা কলেজ ও স্কুল থেকে উঠিয়ে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক ও স্পেনের মত ইসলামী শিক্ষা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে বিপথগামী করার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও মাদরাসার মোহতামিম মুফতী আজিজুল হক বলেন, বাংলাদেশের যত জাল ও ভেজাল রাজনীতি আছে তা দূর করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা। ইসলামী হুকুম প্রতিষ্ঠায় আলেম ও মুজাহিদ রা একই শুরু কথা বলবে। একত্রে চলবে বলে আমি আশাবাদী।

সরকারী মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. একে এম ইয়াকুব হোসাইন বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সামনে পরাজিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ কাজী মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন- স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও পার্বত্য অঞ্চলে আমরা আজ পরাধীন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে কখনো কখনো ভারত বা মিজোরামের পতাকা উড়ছে, যা আমাদের জন্য বেদনা ও লজ্জাষ্কর। হাজী শরীয়তুলস্নাহর সপ্তম পুরম্নষ মাওঃ হানজালা আহমাদ বাহাদুরপুর বলেন, ইসলাম ছিনিয়ে নেয়ার আন্দোলন চলছে।

জামিয়া মাহমুদিয়া যাত্রাবাড়ি-এর মুহাদ্দিস মুফতী রেজাউল করীম আবরার বলেন, খতমে নবুওয়তের ইজ্জত রক্ষায় পীর সাহেব চরমোনাই'র নেতৃত্বে দেশের জনগণ রাজপথে নামতে প্রস্তুত আছে।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, বগুড়া জামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ও দলের নায়েবে আমীর মাও. আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মুহাম্মদ ইউনুস আহমেদ, চট্টগ্রামের নানুপুর মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা বেলাল উদ্দিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিক্ষক ড. বেলাল নূর আজিজি, যুগ্ম মহাসচিব মাওলান গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মাওলানা রশিদ আহমদ, ঢাকার মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়ার প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা নুর বক্স, দারুস সালাম মদরাসা সিলেটের শাইখুল হাদীস মাওলানা মাসুক আহমদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেছার উদ্দিন, সময়ের আলোচিত বক্তা মাও. হাফিজুর রহমান ছিদ্দিক কুয়াকাটা, জামেয়া আশরাফুল বড়কাটরা মাদরাসার মুহতামিম ও মুফতী ফজলুল হক আমিনী রহ. এর জামাতা মুফতী সাইফুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরু লকরীম আকরাম, ব্যাংকার মাওঃ আবুবকর সিদ্দিক, যশোরের জামেয়া মাদানিয়ার মুহতামিম মাওঃ হারুনুর রশীদ, হাতপাখা মার্কায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ আজাদ, ওসমান গনি মুসাপুরি, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী ও মাওঃ মহিউদ্দিন আশরাফ।

চরমোনাইতে আসা মেহমানদের মধ্যে অসুস্থ ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। উল্লেখ্য, ২৮ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৮ টায় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে চরমোনাইর তিনদিন ব্যাপী মাহফিল সমাপ্ত হবে।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ