আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সেনা তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করার পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী সেনা কবরাস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (বিডিআর বিদ্রোহ) শুধু একটা বিদ্রোহ ছিলো না, এর পেছনে একটা সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র ছিলো। তার মূল কারণটা ছিলো যে, সেনা বাহিনীর মনোবলটা ভেঙে দেয়া এবং এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো। ওই বিদ্রোহের পেছনে সত্যিকার অর্থে কারা ছিলো এর সুষ্ঠু তদন্ত রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি এবং সেনাবাহিনী যে তদন্ত করেছিলো তারও রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। আজকে দুভার্গ্য আমাদের এতো বছর পরও আমরা কিন্তু তদন্ত করে যে প্রকৃত সত্য, সেই সত্য উদঘাটিত করা সম্ভব হয়নি। এর পেছনে কারা ছিলো, কেনো এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছিলো? আমরা মনে করি, এই যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি গোটা জাতির জন্যে অত্যন্ত শোকাবহ দিন এবং একই সঙ্গে একটা আতঙ্কের দিন। এজন্যে যে এই দিনে ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে, এই বিদ্রোহের মধ্যে দিয়ে আমাদের জাতির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ সেনা বাহিনীর এই ৫৭জন কর্মকর্তাকে নিহত করা হয়েছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাকে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছিলো। ” ‘‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমাদের এতো কর্মকর্তা চলে যাননি। একেবারে ৫৬ কর্মকর্তা চলে যাননি, একজন সৈনিক চলে গেছেন। ”
তিনি বলেন, আমরা আজকে এখানে এসেছি আমাদের সেই যারা আমার অত্যন্ত মহান, জাতির গৌরব, জাতিকে রক্ষা করবার জন্য, দেশকে রক্ষা করবার জন্য শপথ নিয়েছিলেন তাদের এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা শোক প্রকাশ করতে, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করতে এসেছি এবং বিএনপির পক্ষ থেকে, আমাদের চেয়ারম্যান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। আমরা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করছি তিনি যেন যারা চলে গেছে তাদের বেহেস্ত নসিব করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার সদর দফতরে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন নিহত হন। এই ঘটনায় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে বিশেষ আদালতে ১৫২জনকে ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে এবং খালাশ পায় ২৭৮জন।
পিলখানার এই নির্মম ঘটনার পর বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়। সংস্থাটি পূর্ণগঠন করে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-(বিজিবি)’ নামকরণ করা হয়।
-এএ