মুযযাম্মিল হক উমায়ের
হজরত আবু বকর সিদ্দীক রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হজরত আমর বিন আস রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে গর্ভনর বানিয়ে পাঠানোর সময় যে নসিহত করেছিলেন, সেটি হলো, ‘হে আমর! প্রকাশ্যে—অপ্রকাশ্যে তুমি আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো ও লজ্জা করো। কারণ, তিনি তোমাকে এবং তোমার আমলকে দেখতেছেন।
তুমি দেখেছো, আমি তোমার অগ্রজদের এবং ইসলাম ও পরিবারের দিক দিয়ে যারা বড় এমন লোকদের তুলনায় দায়িত্ব দিয়ে তোমাকে এগিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তুমি পরকালের আমেল হয়ে যাও। যা আমল করো সেগুলিকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টের জন্য করো। তোমার সাথে যারা আছে, তুমি তাঁদের সাথে পিতার মতো আচরণ করো।
তুমি লোকজনের গোপনীয়তা প্রকাশ না করে, বাহ্যিক অবস্থার উপর যথেষ্ট থাকো। তুমি তোমার কাজে আন্তরিক হও। যুদ্ধের সময় ভীতু না হয়ে সাহসী হও। গণিমতের মালে খেয়ানত হলে, সেটির তদারকি করতে দেরি করো না।
সাথীদেরকে যখন ওয়াজ করো, তখন সংক্ষিপ্ত ওয়াজ করো। তুমি নিজের নফসকে সংশোধন করো, তাহলে তোমার প্রজারা তোমার জন্য সংশোধীত হয়ে যাবে’। সূত্র: হায়াতুস সাহাবা: খ.২, পৃ.৩৫৯
হজরত আবু বকর সিদ্দীক রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হজরত আমর বিন আস ও হজরত খালিদ রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমাকে পৃথক পৃথকভাবে বলেন, ‘প্রকাশ্যে—অপ্রকাশ্যে তুমি আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো।
কারণ, আল্লাহ তায়ালাকে যারা ভয় করেন, তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَمَنْ يَتَّقِ الله يَجْعَلْ لهُ مَخْرَجاً وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لا يَحْتَسِبُ (আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর জন্য নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাঁকে ধারনাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন। সুরা তালাক: আয়াত—৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, وَمَنْ يَتَّقِ الله يُكفِّرْ عَنْهُ سَيِّئاتِهِ وَيُعْظِمْ لَهُ أجْراً (আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভর করে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর কাজ সহজ করে দেন। সুরা তালাক: আয়াত—৪)
তারপর কারণ হিসাবে বলেন, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদেরকে যতো নসিহত করেছেন, তাকওয়ার চেয়ে উত্তম কোন নসিহত নেই। নিশ্চয় তুমি আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় আছো।
এই অবস্থায় কাউকে ধোঁকা দেওয়া এবং বাড়াবাড়ি করার সুযোগ তোমার নেই। দীনের মৌলিক স্তম্ভ এবং তোমাদের কাজের পবিত্রতার বেলায়ও উদাসীন হওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং তুমি ক্লান্ত হয়ে যেয়ো না। এবং বিরত থেকো না’।
হজরত আমর বিন আস রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর কাছে তিনি চিঠির মাধ্যমে বার্তা পাঠান। বার্তায় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি হজরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর কাছে এই মর্মে বার্তা পাঠিয়েছি যে, সে যেনো তোমার সহযোগিতার জন্য তোমার সাথে গিয়ে মিলিত হয়।
সুতরাং সে যখন তোমার কাছে গিয়ে পৌঁছবে, তখন তুমি তাঁকে উত্তম সংশ্রব দান করো। তাঁর সাথে উত্তম আচরণ করো। তাঁর উপর বাড়াবাড়ি করো না। তোমাকে তাঁর উপর এবং অন্যদের উপর দায়িত্ব দিয়ে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে একক বলয়ে তাঁকে ছাড়া কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করো না। বরঞ্চ তুমি তাঁদের সাথে পরামর্শ করো। এবং তাঁদের বিরোধীতা করো না’। সূত্র: হায়াতুস সাহাবা: খ.২ পৃ.৩৬০
-এটি