মুযযাম্মিল হক উমায়ের: হজরত খান সাহেব রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, আমাকে হজরত নানুতাবী রাহিমাহুল্লাহু তায়ারা বলেছেন, মাওলানা কুতুবুদ্দীন খান সাহেব রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা পাক্কা মুকাল্লিদ ছিলেন।
অন্যদিকে মাওলানা নাজির হুসাইন সাহেব রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা পাক্কা গায়রে মুকাল্লিদ ছিলেন। এই কারণে তাঁদের দুইজনের মধ্যে সর্বদাই লেখিত তর্ক—বিতর্ক চলতো।
একবার আমার মুখ ফসকে এই কথাটি বের হয়ে যায় যে, যদি নবাব সাহেব কিছুটা নমনীয় হতেন এবং মাওলানা নাজির হুসাইন নিজের কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসতেন, তাহলে তাঁদের উভয়ের মধ্যকার ঝগড়া মিটে যেতো।
হজরত নানুতাবী রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, আমার উক্ত কথাটি কে জানি গিয়ে মাওলানা নবাব সাহেবের কাছে পেঁৗছে দেয় এবং মাওলানা নাজির হুসাইন সাহেবের কাছেও পেঁৗছে দেয়। মাওলানা নাজির হুসাইন সাহেব তো আমার উক্ত মন্তব্য শুনে অনেক রাগ হয়ে যান।
কিন্তু মাওলানা নবাব সাহেব আমার উক্ত মন্তব্য দ্বারা অনেক প্রভাবিত হয়ে পড়েন। তাই তিনি আমি যেখানে থাকি, সেখানে চলে আসেন। এসে আমার পায়ে পাগড়ি রেখে দিয়ে পা জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেন।
বলতে থাকেন, ভাই! আমার থেকে যে পরিমান বাড়াবাড়ি হয়েছে, আপনি আল্লাহ তায়ালার জন্য আমাকে সেগুলো ধরিয়ে দিন। আমি নিজেকে শুধরে নিবো। এর জন্য আমি অত্যন্ত অনুতপ্ত। আর এতে আমি মিথ্যার কোন আশ্রয় নিইনি। (এখানে তিনি কোন এক সময়ে কোন কল্যাণার্থে বলে থাকা একটি মিথ্যার বিষয় উল্লেখ করেন। যেটি সেই সময় কোন কারণ বশত বলার অনুমতি শরিয়ত কর্তৃক ছিলো)
হজরত নানুতাবী রাহিমাহুল্লাহু তায়ারা হজরত নবাব সাহেবের এমন কাকুতি আর বিনয় দেখে নিজে হতভম্ব হয়ে পড়েন। এমনিতেও নবাব সাহেব বয়সেও বড় ছিলেন। তাই তিনি কোন কিছু ভেবে না বলতে শুরু করেন, ‘নবাব সাহেব! আপনি তো হলেন আমার বুজুর্গ। আমি আপনাকে সংশোধণীয় কিছু বলার তো সুযোগ দেখছি না।
আর আমি এমন বড় বেআদবীই বা কেমনে করতে পারি? আপনাকে হয়তো কেউ ভুল তথ্য দিয়েছে। মোটকথা, আমি অনেক সময় সান্তনার কথাবার্তা বলে, হজরতের ধ্যান—ধারনাকে অন্য দিকে নিতে সক্ষম হয়েছিলাম। তথাপি পুরো সময় জুড়ে তিনিও কান্না করতেছিলেন, আমিও সাথে সাথে কান্না করতেছিলাম’।
হজরত খান সাহেব রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, হজরত নানুতাবী রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা উক্ত ঘটনা বর্ণনার করার সময়ও তাঁর চোখ অশ্রম্নতে ভরে ওঠেছিলো। সূত্র: আরওয়াহে সালাসা: পৃ.২৬১
-এটি