আবদুল আযীয কাসেমী।।
পারষ্পরিক সাক্ষাতের প্রাক্কালে অভিবাদন জানানো একটি ঐতিহ্যবাহী রীতি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এ রীতির প্রচলন ছিল এবং আজও অব্যাহত আছে। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইসলামের কোন সার্বজনীন ও যুগান্তকারী নির্দেশনা থাকবে না, এটা হতেই পারে না। বরাবরের মতোই ইসলাম এখানেও পরিচয় রেখেছে তার স্বাতন্ত্র্যের, সৃজনশীলতার।
পারষ্পরিক দেখা-সাক্ষাতের প্রাক্কালে অভিবাদন জানানোর জন্য জাহিলী যুগে বিভিন্ন শব্দের প্রচলন ছিল। যেমন একটি শব্দ ছিল ‘হায়্যাকাল্লাহ’। এ বাক্যটির অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবি করুন। এটা মোটামুটি অর্থবহ হলেও এখানে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রসঙ্গটি অনুপস্থিত। সালামে কিন্তু এ প্রসঙ্গটিও খুব চমাৎকারভাবে এসেছে।
আরেকটি শব্দ ছিল ‘আনইম সাবাহান বা ইম সাবাহান’, এর অর্থ হচ্ছে অনেকটা আমাদের বাংলায় শুভ সকালের মতো। ইসলাম এসব বাদ দিয়ে অভিবাদনের জন্য একটি অসাধারণ বাক্য নির্বাচন করে। আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আহা কি সুন্দর তার ব্যঞ্জনা ও সুর মূর্চনা। এ বাক্যটির অর্থ হচ্ছে তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, আর বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত, বরকত...।
শুভ সকাল, শুভ বিকাল, গুড আফটারনুন, গুড নাইটের মতো কোন অসার বা তাৎপর্যহীন বাক্যের পরিবর্তে ইসলাম দিয়েছে একটি যুগান্তকারী, বৈভবপূর্ণ ও ঐশ^র্যময় বাক্য, যার ভেতর রয়েছে একটি সার্বজনীন শান্তি, নিরাপত্তা আর ভালোবাসার পয়গাম। বাক্যটি শোনামাত্রই মন খারাপ থাকলেও ভালো হয়ে যায়। সালামকারী ব্যক্তির প্রতি তৈরি হয় একটি হৃদ্যতাপূর্ণ উষ্ণ সম্পর্ক।
তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি সালাম কেবল ভালোবাসার প্রকাশ নয়, বরং এর মধ্যে রয়েছে যুগপৎ ভালোবাসার হক আদায়ের ব্যবস্থাও। ভালোবাসার দাবি হলো, তার জন্য রব্বে কারিমের সমীপে এমন এক জীবনের কামনা করা, যেখানে কেবল শান্তি আর নিরাপত্তা।
সালামের মধ্যে যেমনিভাবে আছে অপর ভাইয়ের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা, পাশাপাশি সালামকারী ব্যক্তির পক্ষ থেকেও এ প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়, তুমি আমার পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমার দিক থেকে বিন্দুমাত্র কষ্ট তোমাকে সইতে হবে না। ইমাম ইবনুল আরাবি তার ‘আহকামুল কুরআন’ গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে ইমাম সুফিয়ান বিন উয়াইনা (রাহিমাহুল্লাহর) বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন।
সুফিয়ান বিন উয়াইনা বলেন, ‘তুমি কি জানো সালাম কি? সালাম মানে হলো তোমার ভাইকে তুমি এ বার্তা দিচ্ছ যে, তুমি আমার দিক থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ’। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলমান তো সেই, যার হাত ও মুখ থেকে অপর মুসলমান ভাই নিরাপদ থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম) অর্থাৎ কোনভাবেই সে তার অপর ভাইকে কষ্ট দেবে না। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি এক সালামের ভেতর কত কিছু লুকিয়ে আছে। যদি এসব তাৎপর্য মাথায় রেখে আমরা সালাম দেই, তবে আমাদের এ সালামের মাধ্যমেই একটি জাতির সংশোধনের ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে। সবাই যদি এভাবে পরষ্পরের কল্যাণকামনায় ব্যাপৃত থাকি, অন্যকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারি, তাহলে ভেবে দেখুন আমরা কি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ উপহার দিতে পারব।
সালামের প্রচার-প্রসার গুরুত্ব ও ফজিলত
সালাম যেহেতু সার্বজনীন ভালোবাসা আর শান্তির বার্তাবাহী, তাই এমনিতেই যুক্তির জায়গা থেকেই এর বেশি বেশি প্রচার-প্রসার কাম্য। কিন্তু দুংখজনকভাবে মুসলমানদের মধ্যে অন্যান্য বহু বিষয়ের মতো এ বিষয়েও চরম উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়। যারা দেন তারাও একে নিছক একটি অভিবাদনের বাক্য হিসেবে বিবেচনা করেন। এর মধ্যে যেসব অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আছে, তার প্রতি খেয়াল থাকে না সবার। একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ হিসেবে দেখার মানসিকতা তৈরি হয়নি মুসলিম সমাজে। অথচ কুরআন-সুন্নাহয় সালামের ফজিলত বিষয়ক বহু বর্ণনা রয়েছে। আমরা আজকের লেখায় সংক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি হাদিস উদ্ধৃত করছি।
(ক) হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেছেন, আমাদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা মুমিন হবে। আর পরষ্পরের মধ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক না হবে, ততক্ষণ তোমরা পূর্ণাঙ্গ মুমিন হতে পারবে না।
আমি কি তোমাদের বলব, কীভাবে তোমাদের মধ্যে পারষ্পরিক ভালোবাসা আর হৃদ্যতা তৈরি হবে? তাহলে জেনে রেখো তা হচ্ছে, তোমরা পরষ্পরের মধ্যে বেশি বেশি সালাম বিনিময় করে। অপর ভাইটি পরিচিত হোক আর না হোক। (সহিহ মুসলিম)
(খ) হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, এক ব্যক্তি এসে নবীজিকে জিজ্ঞেস করল, ইসলামে সবচে’ মর্যাদাপূর্ণ কাজ কি? তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা মানুষদের খাবার খাওয়াও এবং সালামের প্রচার-প্রসার করো, পরিচিত হোক, কিংবা অপরিচিত। (বুখারি ও মুসলিম)
(গ) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, আল্লাহর নিকট সবচে মর্যাদাবান ব্যক্তি সে, যে আগে আগে সালাম করে। (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিযি)
(ঘ) হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সালাম’ হলো আল্লাহর একটি নাম। তিনি তা দুনিয়াতে অবতীর্ণ করেছেন। তোমরা সালামের প্রচার-প্রসার করো। কোন মুসলমান যখন কোক মজলিসে তার ভাইদেরকে সালাম করে, তখন আল্লাহর কাছে তার এক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। কেননা সে তাদেরকে আল্লাহর ‘সালাম’ নামটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। তারা যদি তার সালামের উত্তর না দেয়, তবে তাদের চেয়ে উত্তম লোকেরা তার সালামের জবাব প্রদান করে। অর্থাৎ ফিরিশতারা তার সালামের উত্তর দেয়। (মুসনাদে বাযযার ও তাবারানি কাবির)
(ঘ) হযরত আবু হুরায়রা থেক বর্ণিত একটি হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সবচে’ কৃপণ হলো সে ব্যক্তি, যে সালাম দিতেও কার্পণ্য করে। (আল মুজামুল কাবির, তাবারানি)
সাহাবায়ে কেরামের ওপর নবীজির বক্তব্যের প্রভাব
সাহাবায়ে কেরামের উপর নবীজির বক্তব্যের কী গভীর প্রভাব পড়েছিল তা বুঝতে আমরা কেবল একটি হাদিস উদ্ধৃত করছি। ইমাম মালেক বিন আনাস তার সুবিখ্যাত গ্রন্থ ‘মুআত্তায়ে মালিকে’ তুফাইল বিন উবাই বিন কা’ব থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) মাঝে মাঝে শুধু মুসলমানদেরকে সালাম দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাজাযের যেতেন। যেন তাদেরকে সালাম দিয়ে নেকি অর্জন করতে পারতেন। অথচ বাজারে তার আর কোন কাজ নেই। ক্রয়-বিক্রয় কোনটাই তার উদ্দেশ্য থাকত না।
সালামের উত্তর উত্তম পদ্ধতিতে দিন
একজন মুসলমান যখন অপর মুসলমান ভাইকে সালাম দেয়, তখন অপর ভাইয়ের জন্য উচিত হলো, তার চেয়ে উত্তমরূপে সালামের উত্তর দেওয়া। অন্ততপক্ষে সে যতটুকু সুন্দরভাবে দিয়েছে ততটুকু রক্ষা করা। যেমন কেউ যদি এভাবে সালাম দেয় ‘আস সালামু আলাইকুম’, তাহলে উত্তরদাতা ব্যক্তি অন্ততপক্ষে ‘ওয়ালাইকুমুস সালাম’ বলবে।
তবে উত্তম হলো আরও বাড়িয়ে এভাবে বলা, ‘ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’, আরও বাড়াতে চাইলে ‘ওয়া বারাকাতুহু’। এটাই কুরআনের নির্দেশনা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমাদের অভিবাদন জানানো হয়, তোমরা আরও উত্তমরূপে অভিবাদন জানাও, অথবা অন্ততপক্ষে সে যা বলেছে তাই তাকে উত্তর দাও’ (সূরা নিসা, আয়াত:)
স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়োগিকভাবে বিষয়টি সাহাবায়ে কেরামের সামনে ব্যখ্যা করেছেন। ইমাম ইবনে জারির তাবারি ও ইবনু আবি হাতিম উভয়ের তাফসিরগ্রন্থে বিভিন্ন সনদে এ হাদিসটি উদ্ধৃত করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, ‘একবার এক ব্যক্তি এসে নবীজিকে সালাম দিল এভাবে ‘আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ’ নবীজি তার উত্তরে বললেন, ‘ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’।
কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে সালাম দিল ‘আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া রাহমাতুল্লাহ’, নবীজি উত্তরে বললেন, ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। এরপর আরেকজন এসে সালাম দিল, ‘আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’, নবীজি উত্তর দিলেন, ‘ওয়া আলাইকা’।
ঐ সাহাবি খানিকটা মনোক্ষুণ্ন হলেন। নবীজিকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনার জন্য আমার মা-বাবা কুরবান হোক আপনি কি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট? নবীজি বললেন, না আমি তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নই। কিন্তু তুমি আমার বলার জন্য আর কিছু বাকি রাখনি। এজন্য কুরআনি অপশন অনুযায়ী তুমি যেমন বলেছ সেভাবে উত্তর দিয়েছি।
উপর্যুক্ত হাদিসটি থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় আমাদের সামনে আসল। প্রথমত আয়াতে উল্লিখিত ‘উত্তমরূপে অভিবাদন জানাও’ এর পদ্ধতি হলো, সালামের মধ্যে শব্দ বাড়িয়ে দেওয়া। যেমন ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ওয়া বারাকাতুহু।
দ্বিতীয়ত, এ বাড়ানোর বিষয়টি ওয়া বারাকাতুহুর মধ্যে শেষ। এর বেশি নবীজি কোন শব্দ ব্যবহার করেননি। এর কারণটাও পরিষ্কার। যেহেতু অভিবাদনের চাহিদা হলো সেটি সংক্ষিপ্ত বাক্যে হওয়া। যদি অতিরিক্ত বাগাড়ম্বর করা হয়, তা সাধারণত অতিথির বিরক্তির কারণ হয়। স্বয়ং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিজের কাজের মাধ্যমে শিখিয়ে দিয়েছেন। তৃতীয়ত, কেউ যদি ওয়া বারাকাতুহু পর্যন্ত বলে সালাম দেয়, আর তার উত্তরে ‘ওয়া আলাইকা’ বলা হয়, তবে তাও যথোপযুক্ত উত্তর বলে গণ্য করা হবে।
আয়াত থেকে এ বিষয়টিও পরিষ্কারভাবে অনুমিত হয় যে, সালামের উত্তর দেওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে ফকিহগণও একমত যে, সালাম দেওয়াটা সুন্নাত কিন্তু উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। ইমাম হাসান বসরি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘সালাম দেওয়াটা আপনার ইচ্ছাধীন বিষয়, কিন্তু সালামের উত্তর দেওয়া ফরজ’। তবে এ নিয়ম থেকে কিছু ব্যতিক্রমও আছে। যেমন নামায আদায়ের সময়, প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করার সময়, কুরআন তিলাওয়াতের সময়, আযান বা ইকামতের সময়, খুতবা প্রদানের সময় এবং ধর্মীয় কিতাবপত্র পাঠদানের সময় সালাম দিলে সালামের উত্তর দেওয়া আবশ্যক নয়। এমনকি এমন সময়গুলোতে সালাম দেওয়াই উচিত নয়।
সালাম বিষয়ক কিছু বিবিধ প্রসঙ্গ
সালাম আগে দেওয়ার বিষয়ে বহু ফজিলতের কথা হাদিস শরিফের মধ্যে পাওয়া যায়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলার সবচে’ নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে একটি শ্রেণী হলো, যারা আগে আগে সালাম দেয়। (আবু দাউদ, তিরমিযি: ২৬৯৪, মুসনাদে আহমদ) এমনিতে আগে আগে সালাম দেওয়া থেকে বোঝা যায়, তার মনে অহংকার নেই। আগে আগে সালাম দেওয়া অহংকার থেকে নিজেকে মুক্ত করার একটি চমৎকার ফর্মুলা।
হাদিস শরিফে এসেছে আরোহী ব্যক্তি পথচারীকে সালাম দিবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি সালাম দিবে বসে থাকা ব্যক্তিকে। ছোট দল আর বড় দল মুখোমুখি হলে অপেক্ষাকৃত ছোট দলটি বড় দলকে সালাম দেবে। একটি দলের পক্ষ থেকে একজন সালামের উত্তর দিলেই অন্যদের পক্ষ থেকে দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদেরও সালাম দিতেন। (দেখুন, তিরমিযি: ২৬৯৬)
ঘরে প্রবেশ করার পর ঘরে থাকা ব্যক্তিদের সালাম দেওয়া সুন্নাত। নবীজি হযরত আনাসকে বলেছেন, ঘরে ঢোকার সময় সালাম দাও। এতে তোমার ও তোমার ঘরের লোকদের জন্য বরকত নিহিত আছে। (তিরমিযি: ২৬৯৮)
মোটকথা, সালাম কেবল একটি গতানুগতিক অভিবাদনের শব্দই নয়; বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। নবীজি উম্মাহকে সালামের প্রচার-প্রসারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। সালামের মধ্যে প্রতি শব্দের বিনিময়ে রয়েছে প্রতিদানের ঘোষণা। শুধু আস সালামু আলাইকুম বললে পাবেন দশ নেকি। আরেকটি শব্দ যোগ করে ‘ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বললে পাবেন বিশ নেকি। আরেকটি যোগ করে ‘ওয়া বারাকাতুহু’ বললে পাবেন ত্রিশ নেকি। (তিরমিযি: ২৬৮৯)
সুতরাং নবীজির এ গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহটিকে আমাদের বাস্তব জীবনে বেশি থেকে বেশি প্রয়োগ করতে হবে এবং একে জীবন্ত করে তুলতে হবে। সালামের মিষ্টি সৌরভে সুরভিত হোক আমাদের এ বসুন্ধরা।
-এটি