আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আফরিন শহরে এক রকেট হামলায় ছয় বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার তুরস্কের সমর্থিত বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত শহরটির ওপর এই হামলায় আরো ৩০ ব্যক্তি আহত হয়েছে।
হামলার সাথে কারা জড়িত তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা না গেলেও ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ায় মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, কুর্দি যোদ্ধা ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে বলে, ‘দুই শিশুসহ মোট ছয়জন নিহত হয়েছে।’
এছাড়া প্রায় ৩০ জন লোক এই হামলায় আহত হয়েছে বলে জানানো হয়।
২০১৮ থেকে সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তুরস্কের সামরিক অভিযানের পর থেকে শহরটি তুরস্ক ও তার সমর্থিত সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তখন থেকে এই শহর ও এর চারপাশের অঞ্চলে হামলা চালানো হচ্ছে।
সিরিয়ায় কুর্দি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ইউনিটকে (ওয়াইপিজি) তুরস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। তুরস্কের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত এই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে আঙ্কারা।
২০১১ সালের মার্চে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সিরিয়ার একনায়ক বাশার আল আসাদের পদত্যাগের দাবিতে দেশটির বিভিন্ন শহরে রাস্তায় বিক্ষোভে নামে সাধারণ জনতা। বাশার আল-আসাদ সামরিক উপায়ে এই বিক্ষোভ দমন করতে চাইলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মুখে পড়ে দেশটি।
দশ বছর চলমান এই গৃহযুদ্ধে দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকই বাস্তুচ্যুত হয়। জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসারে এক কোটির বেশি লোক যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়।
এছাড়া যুদ্ধের কারণে অন্তত ৬৬ লাখ সিরিয়ান গত ১০ বছরে দেশ ছেড়েছেন। দেশ ত্যাগ করা এই সকল সিরিয়ান নাগরিক প্রতিবেশী তুরস্ক, জর্দান, লেবানন, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত বছর জাতিসঙ্ঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধে তিন লাখ ৫০ হাজার দুই শ' নয়জন নিহত হয়েছে।
১১ বছরের গৃহযুদ্ধে শুরুতে বেকায়দায় পড়লেও পরে রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত বেশিরভাগ অঞ্চল পুনরায় দখল করে নেয় আসাদ সরকার।
সূত্র: আলজাজিরা।
এনটি