আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইতিহাসের শক্তিশালী গোত্রগুলোর একটি আদ গোত্র। আদ গোত্রের ১৩ পরিবার ছিল। তাদের বসতি ছিল আম্মান থেকে শুরু করে হাজরামাউত ও ইয়ামন পর্যন্ত। তাদের খেতখামার অত্যন্ত সজীব ও শস্যশ্যামল ছিল।
সব ধরনের বাগ-বাগিচা ছিল তাদের। তারা দৈহিক গঠন ও শক্তি-সাহসে ছিল অন্য সব জাতি থেকে স্বতন্ত্র। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘এমন দীর্ঘকায় ও শক্তিশালী জাতি ইতিপূর্বে পৃথিবীতে সৃজিত হয়নি।’ (সূরা ফজর, আয়াত : ৮)
ইবনে আব্বাস (রা.) ও মুকাতিল (রহ.) থেকে একটি (ইসরায়েলি) বর্ণনায় রয়েছে, তাদের উচ্চতা ছিল ১৮ ফুট (১২ হাত)। তাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘তিনি তাদের দেহের বিস্তৃতি করেছেন অধিক পরিমাণ।’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ৬৯)
মহান আল্লাহ এই জাতির কাছে হুদ (আ.)-কে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আদ জাতির কাছে প্রেরণ করেছি, তাদের ভাই হুদকে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৬৫)
যেহেতু আদ জাতি ছিল মূর্তিপূজারী। তারা আরো নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। হুদ (আ.) তাদের মূর্তিপূজা ছেড়ে একত্ববাদের অনুসরণ করতে এবং সর্বপ্রকার অত্যাচার-উত্পীড়ন বর্জন করে ন্যায় ও সুবিচারের পথ ধরতে বলেন। কিন্তু তারা নিজেদের ধনৈশ্বর্যের মোহে মত্ত হয়ে তাঁর আদেশ অমান্য করে।
অতঃপর নবীর কথা অমান্য করে পাপাচারে লিপ্ত থাকার কারণে আল্লাহ তাআলা আদ জাতিকে ধ্বংস করে দেন। তাদের প্রতি প্রথম আজাব ছিল অনাবৃষ্টি। তিন বছর তাদের এলাকায় বৃষ্টি বন্ধ ছিল।
এতে তাদের ফসল জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। ফলে দেশে অভাব দেখা দেয়। তার পরও তারা শিরক ও মূর্তিপূজা ত্যাগ করেনি। অতঃপর আট দিন সাত রাত তাদের ওপর দিয়ে বয়ে যায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়। এতে তাদের বাড়ি-ঘর, বাগ-বাগিচা, জীবজন্তু সব ধ্বংস হয়ে যায়। তারা নিজেরাও শূন্যে উড়তে থাকে। রাতে তারা মরে উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে থাকে।
আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সেরা শক্তিধর আদ জাতিকে এভাবে ধ্বংস করেন। আল্লাহ তাআলা হুদ (আ.) ও তাঁর অনুসারী মুমিনদের এ আজাব থেকে রক্ষা করেন। বর্তমানে আদ জাতির এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
-এটি