জুলফিকার জাহিদ।।
ভারতে ঝড়ের গতিতে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। এক লাফে দেশটিতে প্রায় ৫৫ শতাংশ দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দ ছাত্রদের জন্য নতুন বিধি-নিষেধ জারি করে অনলাইনে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির মুহতামিম মাওলানা সুফিয়ান কাসেমী সাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, প্রিয় তালেবে এলেম, আরো একবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দেশব্যাপী উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এতে বিভিন্ন প্রদেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অন্যান্য প্রদেশের মত উত্তরপ্রদেশেও এর প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। দ্রুতই এই ভাইরাসের প্রকোপ কমবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই আপাতত প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস স্থগিত করা হচ্ছে।
নেটিশে আরো বলা হয়েছে, আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে উল্লেখিত জামাতগুলোর অনলাইন ক্লাস চালু হবে। এজন্য উল্লেখিত জামাতের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষার বিষয়ে আগামীতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। সেই নির্দেশনার জন্য আপনারা অপেক্ষা করুন। এই শ্রেণীগুলো ছাড়া অবশিষ্ট জামাতের ক্লাস যথারীতি চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দের পক্ষ থেকে।
এদিকে ভারতে মহামারী (কোভিড-১৯) করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় উপমহাদেশের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দও আবাসিক ছাত্রদের জন্য নতুন বিধি-নিষেধ জারি করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব পেডে প্রকাশিত নোটিশে বলা হয়, ‘ করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট শুরু হওয়ায় পুরো উত্তর প্রদেশ ও দেওবন্দ এলাকায় রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
নাযেমে দারুল একামা’র স্বাক্ষরিত নোটিশে আরো বলা হয়, তাই দারুল উলুম দেওন্দের সকল ছাত্রকে বাইরে বের না হয়ে নিজ নিজ কামরায় নিজস্ব মোতাআলায় আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভারতে ঝড়ের গতিতে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। এক লাফে দেশটিতে প্রায় ৫৫ শতাংশ বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ।
ভারতে মঙ্গলবার দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৩৭ হাজার ৩৭৯। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় তা ২১ হাজারেরও বেশি বেড়েছে।
বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৯৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যা মঙ্গলবারের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেড়েছে।
মঙ্গলবার ভারতে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১২৪। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যু। ৫৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সংক্রমণের হার এক লাফে ৪.১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সুস্থতার হার ৯৮.০১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৩৮৯ জন।
পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ওমিক্রনের সংখ্যাও। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী দেশটির মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৩৫।
এর মধ্যে ৬৫৩ জন মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যে একদিনে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ।
সোমবার মহারাষ্ট্রে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ১৬০ জন। তবে মঙ্গলবার এক ধাক্কায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৪৬৬ জন।
মুম্বাই শহরেও সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার ৩৪ শতাংশ সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মুম্বাইয়ে মঙ্গলবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৮৬০।
আক্রান্তের ৮৯ শতাংশ উপসর্গহীন বলেও প্রশাসন জানিয়েছে। অন্যদিকে দিল্লিতে ওমিক্রন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬৪।
এনটি