ফারুক ফেরদৌস।।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ও গোপনীয়তা পরস্পরের কাছে আমানত। নিজেদের সম্পর্কের গোপন বিষয় আশয় অন্যদের কাছে প্রকাশ করা যেমন সাধারণ আদব, ব্যক্তিত্ব ও ভদ্রতা পরিপন্থী, শরঈভাবেও এটা হারাম। অনেকগুলো হাদীসে স্পষ্টভাবে প্রসঙ্গটি এসেছে। রসূল সা. এ রকম ব্যক্তিত্বহীন ও নির্লজ্জ কাজ করতে নিষেধ করেছেন কঠোরভাবে। এ কাজ যারা করে তাদেরকে তুলনা করেছেন মানুষের সামনে মিলিত হওয়া নির্লজ্জ শয়তানের সাথে।
আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি হবে আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিকৃষ্ট, যে স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়, স্ত্রীও তার সাথে মিলিত হয়, তারপর সে স্ত্রীর গোপনীয়তা ফাঁস করে দেয়। -সহিহ মুসলিম
অন্য একটি বর্ণনায় এই বক্তব্যই এসেছে এভাবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্র নিকট সব চাইতে বড় আমানতের খিয়ানত হবে এই যে, কোন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়, স্ত্রীও স্বামীর সাথে মিলিত হয়, এরপর সেই পুরুষ তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। -সহিহ মুসলিম
আরেকটি হাদীসে বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে এসেছে। গোপনীয়তা রক্ষা করা যে স্বামী স্ত্রী উভয়ের ওপরই ওয়াজিব তাও স্পষ্ট করে বলেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এক দিন নামায শেষ করে রসূল সা. বললেন সবাই বসো। তারপর তিনি পুরুষদের লক্ষ্য করে বললেন তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যখন সে তার স্ত্রীর কাছে যায়, দরজা বন্ধ করে, নিজেদের ওপর পর্দা টেনে দেয় এবং আল্লাহ্ তা‘আলা যা গোপন করার নির্দেশ দিয়েছেন তা গোপন করে। কিন্তু পরে অন্যের কাছে বলে, আমি এটা করেছি, আমি এ রকম করেছি? সাহাবীরা নিশ্চুপ রইলেন। রসূল সা. নারীদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে যে এই বিষয়ে কথা বলে?..
তারপর রসূল সা. বললেন, যারা এমন করে তারা হলো ওই শয়তানের মতো, যে একজন স্ত্রী শয়তানের কাছে যায়, এরপর জনসমক্ষে সবার সামনে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করে। -সুনানে আবু দাউদ।
কারো যদি অসুস্থতা থাকে, চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, সে তো অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবে, চিকিৎসককে যতটুকু বলা দরকার বলবে। চিকিৎসকের সামনে প্রয়োজনে দৈহিক সতরও খুলতে হয়। কিন্তু এ সব সমস্যার কথা, বা সমস্যা ছাড়াই এ সম্পর্কিত কথা ফেসবুকের পাবলিক পোস্টে বা কোনো গ্রুপের পোস্টে বলা অসঙ্গত এবং মাত্রা হিসেবে হারামও হতে পারে।
-এএ