বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ভারতে আন্দোলন অবসানের ঘোষণা কৃষকদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় শেষ পর্যন্ত আন্দোলন অবসানের ঘোষণা দিল ভারতের কৃষকরা। ১৫ মাস ধরে চলা এই বিক্ষোভ শেষ হবে শনিবার।

আজ বৃহস্পতিবার দেশটির কৃষক ইউনিয়নগুলো এই ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে দিল্লি সীমান্ত থেকে তাবু সরিয়ে ফেলেছেন তারা। এর আগে ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের পরও সর্বনিম্ন সমর্থনযোগ্য মূল্য কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ বন্ধে অস্বীকৃতি জানায় কৃষকরা।

এ উপলক্ষ্যে দিল্লি সীমান্তের সিঙ্ঘু ও তিকরিতে আজ বিজয় প্রার্থনা ও শনিবার সেখানে বিজয় পদযাত্রার আয়োজন করেছেন কৃষকরা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করে সংগঠনটি। পরে সর্বনিম্ন সমর্থনযোগ্য মূল্য কার্যকরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কমিটি গঠন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সব পুলিশি অভিযোগ তুলে নেয়া ও বিক্ষোভের সময় প্রাণ হারানো কৃষকদের পরিবারকে রাজ্য সরকারগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কৃষকরা।

২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দেশের কৃষি ব্যবস্থার সংস্কারে ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় তিনটি বিল উত্থাপন করে বিজেপি সরকার। বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি এমপিতের কণ্ঠভোটে পাস হয়ে এসব বিল।

বিলগুলোতে কৃষিপণ্যের মজুতদারীর ওপর সীমা তুলে নেওয়া, কোম্পানি ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক চাষ এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস—এমএসপি) তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ওই বিল তিনটি আইনে পরিণত হয়। নভেম্বর থেকে এই আইনগুলো বাতিলের দাবিতে দিল্লির সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কয়েক লাখ কৃষক।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদিও বলেছেন, দেশের বিস্তৃত ও মান্ধাতা আমলের কৃষি ব্যাবস্থাকে ঢেলে সাজানো ও আধুনিকায়নই নতুন তিন কৃষি আইনের উদ্দেশ্য, কিন্তু তার এই বক্তব্যে আস্থা ছিল না আন্দোলনরত কৃষকদের। তারা বক্তব্য ছিল, ওই তিন আইনের ফলে বেসরকারি নানা বড় বড় কোম্পানি কৃষিখাতে হর্তাকর্তা হয়ে যাবে এবং দরিদ্র কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ান পরিবর্তে উল্টো তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়বেন।

প্রায় এক বছর অনড় অবস্থানে থাকার পর শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) অনেকটা আকস্মিকভাবেই বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিল ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ বিষয়ক এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘এই তিনটি কৃষি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল কৃষকের মঙ্গলের জন্য। আমাদের লক্ষ্য সৎ ছিল; কিন্তু কৃষি আইনের সুফলের কথা কিছু কৃষককে আমরা বোঝাতে পারিনি।’ ওই ভাষণে আন্দোলনের পথ ছেড়ে কৃষকদের আবার কৃষিকাজে ফিরে যেতেও অনুরোধ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু তার মৌখিক ভাষণে আস্থা রাখতে পারছিলেন না এসকেএম নেতারা। মঞ্চের অন্যতম নেতা রাকেশ টিকায়েত প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর বলেছিলেন, শুধু প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক ঘোষণায় নয়, পার্লামেন্টেও এই তিন কৃষি আইন বাতিল ঘোষণা করতে হবে । তার আগ পর্যন্ত কৃষকরা আন্দোলন ছেড়ে যাবে না। সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টেও বাতিল হয়েছে এই তিন কৃষি আইন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ