আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে একটি আগ্নেয়গিরি থেকে বের হয়ে আসা অদ্ভূত ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে পালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। গত কয়েক মাসে দ্বিতীয়বারের মতো সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের শিকার হল জাভা দ্বীপ।
আজ শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা এক ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মানুষ দৌঁড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, আর তাদের পেছনে এক বিশাল ছাইমেঘ ও ধোঁয়ার কূণ্ডলী ধেয়ে আসছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাউন্ট সেমেরু থেকে বেরিয়ে আসা আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের ঘন বৃষ্টি দুটি স্থানীয় জেলার আকাশ পুরোপুরি অন্ধকার করে ফেলেছে।
এই ঘটনায় এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। আগ্নেয়গিরির ছাই ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী মাটি থেকে আকাশের ১৫ হাজার মিটার পর্যন্ত মেঘাচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ফলে বিমান চলাচলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় ২.৩০ মিনিটে আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অগ্নুৎপাতের পর এর জ্বালামুখ থেকে চারপাশের ৫ কিলোমিটার এলাকায় মানুষের অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। স্থানীয় কর্মকর্তা থরিকুল হক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ওই এলাকা থেকে মালাং শহরের কাছের একটি সড়ক ও সেতু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনের ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টার (ভিএএসি) বলেছে যে, ছাইয়ের মেঘ মাউন্ট সেমেরু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে ভেসে যাচ্ছে। ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টার সম্ভাব্য বিপজ্জনক আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের অবস্থান এবং গতিবিধি সম্পর্কে বিমান শিল্পকে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টারের আবহাওয়াবিদ ক্যাম্পবেল বিগস বিবিসিকে বলেছেন যে, ১৫ হাজার মিটার ধোয়ার কুণ্ডলী বেশিরভাগ বিমানের উড়ান পথের উচ্চতার চেয়েও বেশি এবং এর ফলে ওই পথের বেশিরভাগ বিমানকে গতিপথ বদলাতে হবে। প্লেনের ইঞ্জিনের শীতল অংশে ছাই জমা হয়ে বায়ুপ্রবাহকে ব্যাহত করতে পারে, যার ফলে ইঞ্জিনগুলি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ বা ব্যর্থ হতে পারে। পাইলটরা এর ফলে তাদের রাস্তা নাও দেখতে পারেন এবং বিমানের কেবিনের বাতাসের গুণমান নষ্ট হতে পারে, যার ফলে অক্সিজেন মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তাও তৈরি হতে পারে।
মাউন্ট সেমেরু একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। যেটি প্রায়ই আকাশে ৪,৩০০ মিটার পর্যন্ত ছাই নিক্ষেপ করে। তবে শনিবারের অগ্ন্যুৎপাতটি অনেক বেশি তীব্র ছিল। যে কারণ বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী সৃষ্টি হয়েছে।
মাউন্ট সেমেরু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬৭৬ মিটার উপরে অবস্থিত। এর আগে গত ডিসেম্বরে এটি বিস্ফোরিত হয়েছিল। সেসময় হাজার হাজার বাসিন্দা অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। এটি ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি। ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অফ ফায়ার’-এ অবস্থিত, যেখানে মহাদেশীয় প্লেটগুলোর মধ্যে ঘর্ষণে ঘন ঘন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং ভূমিকম্প ঘটে।
-এটি