আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রাজিলের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ পারানের শহর পোন্তা গ্রোসায় একটি মসজিদে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৬ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফজরের নামাজের আগে ইমাম আলী মসজিদে কয়েকজন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে মসজিদে ভাঙচুর চালায়, পবিত্র কোরআনে ও মসজিদের দেয়ালে থাকা ইসলামি বাণী লেখা ফেস্টুনে আগুন দেয় এবং মসজিদের তসবিহ ছিঁড়ে ফেলে। সেই সঙ্গে মসজিদের দেয়ালে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য লিখে পালিয়ে যায়।
হামলাটি কারা করেছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা ইরানি বংশোদ্ভুত মাহমুদ সামছি বলেন, আমি প্রথমে কিছু পোড়ার গন্ধ পাই। মনে করেছিলাম রাস্তা থেকে সেই গন্ধ আসছে। পরে মসজিদে গিয়ে দেখি সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে।
ইমাম আলি মসজিদের পরিচালক সেইমান জাবেদ বলেন, মসজিদের একটি টেবিলে দুষ্কৃতিকারীরা আগুন দিয়েছে। ওই টেবিলের ওপর পবিত্র কোরআন রাখা ছিলো। আগুনে কোরআন শরিফ পুড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ভেদাভেদ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করি আমি। হামলাকারীরা হয়তো আরও অনেক কিছু আগুনে পোড়াতে চেয়েছিলো। কিন্তু ফজরের নামাজের জন্য যখন মুসল্লিরা নামাজে আসতে শুরু করে তখন তারা পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, পোন্তা গ্রোসা শহরে প্রায় ৪০ বছর আগে এই মসজিদটির নির্মাণ করেছিলো ব্রাজিলে বসবাসরত লেবানিজ কমিউনিটি। এই মসজিদে বর্তমানে লেবাননের অভিবাসী বাদেও পাকিস্তান, তিউনিশিয়া, সিরিয়া ও সাহারা মরুভূমির আশপাশের দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীরা নামাজ আদায় করেন।
ব্রাজিলে ১৭ লাখের মতো মুসলমান রয়েছে। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫-৬ শতাংশ। ব্রাজিলে মোট মসজিদের সংখ্যা ১৩০টি। ২০০০ সালের তুলনায় মসজিদের সংখ্যা এখন চার গুণ বেড়েছে। এ ছাড়া শিশুদের ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য রয়েছে মক্তব-মাদরাসা ও ইসলামিক স্কুল।
রিও ডি জেনেইরোয় রয়েছে বৃহৎ ইসলামিক সেন্টার, ইসলামিক স্কুল, বেশ কয়েকটি বড় মসজিদ। সাওপাওলোতেও রয়েছে বিশাল মুসলিম কমিউনিটি। ব্রাজিলের সাওপাওলো, রিও ডি জেনেইরো ও রিগ্রেন্ডে দে সোল তুলনামূলক মুসলিম অধ্যুষিত শহর। এ ছাড়া পারানা শহরে রয়েছে আরব বংশোদ্ভূত উল্লেখযোগ্য মুসলিম সম্প্রদায়।
-এএ