আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশে মথুরার শাহী ঈদগাহে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে হিন্দু মহাসভা। ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ওই ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশ বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। পুলিশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং একইসাথে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়ার জন্য জনগণকে আবেদন করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশ– অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভা ঘোষণা করেছে– আগামী ৬ ডিসেম্বর শাহী মসজিদ ঈদগাহে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জলাভিষেক হবে পূজাঅর্চনা করা হবে। এ ধরণের কর্মসূচির ঘোষণা এমন সময়ে করা হয়েছে যখন স্থানীয় আদালত ১৭ শতাব্দীর মসজিদটি অপসারণের আবেদনের শুনানি করছে। আদালতে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্সের মালিকানার অধিকার দাবি করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের একাংশ বলছে– অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা ঘোষণা করেছে– তারা মথুরা মন্দিরে ভগবান কৃষ্ণের একটি মূর্তি তার আসল জন্মস্থানে স্থাপন করবে। হিন্দু মহাসভার দাবি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আসল জন্মস্থান হল বিখ্যাত মন্দির সংলগ্ন মসজিদ। হিন্দু মহাসভার নেতা রাজ্যশ্রী চৌধুরি বলেন– মহাজলাভিষেকের পরে প্রতিমা স্থাপন করা হবে। ৬ ডিসেম্বর শুদ্ধিকরণের পর এই স্থানে প্রতিমা স্থাপন করা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত– ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েক শ' বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা।
এদিকে– হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সাম্প্রতিক ঘোষণার পরে– স্থানীয় সংগঠনগুলো মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথের কাছে শহরে নিরাপত্তা বাড়ানোর আবেদন করেছে যাতে মথুরার সামাজিক সম্প্রীতি কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
মথুরার কওমি একতা মঞ্চের সদস্যরা আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত নিরাপত্তা দাবি করে বলেছেন– শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান এবং শাহী ঈদগাহের মধ্যে চুক্তির পর প্রায় ৫৩ বছর হয়ে গেছে। আমরা এটা ভাঙতে দিতে পারি না।
শনিবার মথুরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নবনীত সিং চাহাল এবং সিনিয়র পুলিশ সুপার গৌরব গ্রোভার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার খতিয়ে দেখেছেন। এর পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মকর্তাদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র পুলিশ সুপার গৌরব গ্রোভার সাফ জানান, জেলায় ইতোমধ্যেই ১৪৪ ধারা কার্যকর রয়েছে। গুজব ছড়ানো ও শান্তি বিঘ্নিতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র: পুবের কলম।
এনটি