আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গেছে। যা ওই মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া টাকার হিসাবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। শনিবার সকাল ৯টার দানবাক্স খোলার পর দিনব্যাপী গণনা শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে টাকার এই হিসাব পাওয়া যায়।
বিপুল পরিমাণ এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বিদেশী মুদ্রা ও দান হিসেবে প্রায় চার কেজির মতো সোনা ও রূপার গহনা পাওয়া গেছে।
বিদেশী মুদ্রার মধ্যে ছিল ভারতীয় রুপি সবচাইতে বেশি। আরো পাওয়া গেছে ডলার, ইউরো, সৌদি রিয়েল, ইয়েন ও দিনারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। বিদেশী মুদ্রার সঠিক পরিমাণ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে গণনা সংশ্লিষ্টরা ধারণা দেন, সোনা, রূপা ও বিদেশী মুদ্রা মিলে বাজার মূল্য অনুযায়ী এগুলোর দাম অর্ধ কোটি টাকার মতো হবে।
এর আগে সর্বশেষ ১৯ জুন দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন সর্বোচ্চ দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাধারণত তিন মাস পরপর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। কিন্তু মহামারী করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে বিলম্বে দানবাক্স খোলা হচ্ছে। এবার ৪ মাস ১৭ দিন পর মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। বাক্সগুলো থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এবার ১২ বস্তা টাকা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। টাকা গণনার কাজ শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়।
রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও কিশোরগঞ্জ করপোরেট শাখার প্রধান মো: রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী টাকা গণনায় অংশ নেন। তাদেরকে টাকা ভাঁজ করে সহযোগিতা করেন পাগলা মসজিদ অধীন মাদরাসার শতাধিক ছাত্র ও শিক্ষক।
পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা) গোলাম মোস্তফা টাকা গণনার কাজ পরিদর্শন করেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানমের তত্ত্বাবধানে টাকা গণনার কাজ তদারকির দায়িত্বে ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম, শিহাবুল আরিফ, অর্ণব দত্ত ও মো: মাহমুদুল হাসান।
এ সময় দানবাক্স খোলার কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও মসজিদের সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
টাকা গণনার সময় পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো: শওকত উদ্দীন ভূঞাসহ মসজিদ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এনটি