আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের জাঙ্গাল গ্রামে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল দুই দফা দু'পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে।
সোমবার (১ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার বিকেলে সুলতানপুর ইউনিয়ন জাঙ্গাল গ্রামের মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া প্রায়শই তার স্ত্রীকে মারধর করতেন। এনিয়ে একই এলাকা শ্বশুর বাড়ীর মাজু মিয়া প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনার জের ধরে প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয়পক্ষের সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে আহত অবস্থায় দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জনকে হাসপাতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেলা আনা হয়। পরে চিকিৎসা নিতে এসে দুই পক্ষ আবারো ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত স্টাফরা হাসপাতালের প্রধান ফটক আটকে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ দাঙ্গাবাজকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটককৃত ও আহতরা হলেন- মো. শামীম মিয়া, সুমন মিয়া, মো. তৌহিদ মিয়া, জামিল আহমেদ, রুবেল মিয়া, মো. খলিলুর রহমান, মাহবুব রহমান, জহিরুল ইসলাম, ইয়ামিন মিয়া, সাদেক মিয়া, আকরাম হোসেন, ফাজু মিয়া, বাবুল মিয়া, দ্বীন ইসলাম, মো. ইসমাইল, রফিক মিয়া, মো. আরিফ ও জয়নাল মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাব্বির আহমেদ, জানান দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন রোগী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালে এসে তারা আবারো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এসময় হাসপাতাল থেকে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। তবে আহতদের মধ্যে কারো অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, সুলতানপুর ইউনিয়নের জাঙ্গাল গ্রামের জুয়েল তার স্ত্রীকে প্রায়শই মারধর করতো, তার একাধিক স্ত্রী আছে এনিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। আজ (সোমবার) সকালে সে তার স্ত্রীকে মারধর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেলে জামাই এবং শ্বশুরবাড়ির পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি। পরে দুপক্ষের লোকজন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষ হয়।
পরে আহত অবস্থায় দুই পক্ষ হাসপাতালে আসে। হাসপাতালে এসে তারা সন্ধ্যার দিকে আবারো মারামারিতে লিপ্ত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ২০ জনকে আটক করে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
-এএ