সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা
গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি>
তের বিঘা জমিতে শসা লাগিয়েছিলেন গোয়াইনঘাটের পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের তারুখাল গ্রামের দুই কৃষক। ফুল ফুটলেও শসার দেখা নেই। মাঠের পর মাঠ একই চিত্র। শসা চাষ করে লোকসানে পড়েছেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার অনেক কৃষক।
গত শুক্রবার উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের তারুখাল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে ঢেকে আছে সবুজে। বাঁশের তৈরি কাঠির সঙ্গে সুতো বেঁধে তৈরি করা হয়েছে মাচা। এই মাচা শসার গাছে ভরা। গাছে ঝুলছে হলুদ ফুল। কিন্তু কোনো শসা নেই।
পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন কৃষক সমিতির সভাপতি তারুখাল গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার (বাবুল) ও কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তারা স্থানীয় আহারকান্দি বাজারের বসু চন্দ্র দাসের মেসার্স কৃষি বীজঘর-২ থেকে 'মেটাল সীড' নামের শসার বীজ কিনে ক্ষেতে লাগিয়েছেন। সব বীজই কিনেছেন তারা মেসার্স কৃষি বীজঘর-২ থেকে।
কৃষক হাবিব ও বাবুল বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ১৩ বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ প্রায় ৭ লাখ টাকা। গাছে অনেক ফুল আছে। কিন্তু একটাও ফল ধরেনি। ফলন ভালো হলে এ মৌসুমে শসা বিক্রি করে অন্তত ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পাওয়া যেত। আমরা বাজারের নকল বীজ কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আমরা দিশেহারা। বিষয়টি কৃষি কর্মকর্তাদের জানানোর পরও সঠিক কোন পরামর্শ পাইনি। ভেবেছিলাম শসা বিক্রি করে ভালো একটা টাকা পাব। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবো। এখন শসার দাম ভালো আছে, কিন্তু ক্ষেতে কোনো শসা নেই।
মেসার্স কৃষি বীজঘর-২ এর ডিলার বসু চন্দ্র বলেন, ‘তিন বছর ধরে শসার বীজ বিক্রি করছি। ফলন ভালো হওয়ায় এ বীজের প্রতি কৃষকের ব্যাপক আগ্রহ ছিল। এ বছর বিক্রিও হয়েছে ভালো। এখন কৃষক অভিযোগ করছেন ফলন হচ্ছে না। কৃষক আমার এলাকার, আমি তাদের সাথে থেকে সহযোগিতা করবো, মেটাল সীড কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে এর একটা সমাধান বের করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী এই ১৩ বিঘা জমিতে আর্থিক ব্যায় সংক্রান্ত বিষয়ে দ্বিমত পোষন করে বলেন, ১৩ বিঘা জমিতে ৬/৭ লাখ টাকা খরচ হওয়ার কথা নয়। তবে এই কৃষকরা এবার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সার্বক্ষণিক আমার লোক মনিটরিং করছে।
-এএ