আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ‘হযরত মুহাম্মদ সা. সমগ্র সৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর রহমত। তার কালজয়ী আদর্শ মানবতার শান্তি মুক্তি নিরাপত্তা ও সম্প্রীতির গ্যারান্টি দেয়। তিনি কেবল মুসলমানদের নবী নন। মহান আল্লাহ যেমন রাব্বুল আলামীন, কুরআন মজীদ তেমনি সমগ্র পৃথিবীর মানুষের জন্য হেদায়ত গ্রন্থ। একইভাবে হযরত মুহাম্মদ সা. সমগ্র সৃষ্টির জন্য আল্লাহর রহমত। শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় হযরত মুহাম্মদ সা. এর আদর্শের কোনো বিকল্প নেই। আজকের নীতি নৈতিকতাহীন অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের সকলকে হযরত মুহাম্মদ সা. এর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।’
সিলেটে জাতীয় সীরাত কনফারেন্সে মূখ্য আলোচকের বক্তব্য দিতে গিয়ে লেখক গবেষক ও চিন্তক মাও. উবায়দুর রহমান খান নদবী এসব কথা বলেন।
কনফারেন্সের সমন্বয়ক ইউরোপে ইসলামের ভাষ্যকার মুফতি আবদুল মুনতাকিম বলেন, ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। রাসূল সা. এর জীবনচরিত ইসলামের জীবন্ত নমূনা। সুতরাং আমাদেরকে মুকাম্মাল দ্বীন ও মুসতাকিল তাহযীব পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ, লালন, প্রচার ও বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতি রক্ষার শ্লোগান নিয়ে আয়োজিত জাতীয় সিরাত কনফারেন্স সিলেট-২০২১ এ সিলেটের ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনা তৈরী করেছে। উদ্যোক্তাদের ধারণাকে পিছনে ফেলে হাজার হাজার মানুষ কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন। সুপরিসর আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টার কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে বাইরের ক্যাম্পাসে উপচেপড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে।
২৮ অক্টোবর বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১টার পর থেকেই মানুষের স্রোত সেন্টারের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। বেলা আড়াইটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
তিন পর্বে চলা এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদীস আল্লামা আবদুল মুছাব্বির আইয়রী। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক জামেয়াতুল খাইর সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মুফতি আবদুল মুতাকিম। এর আগে কুরআন মাজীদ থেকে তিলাওয়াত করেন হাফিজ মাসউদ।
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, সকল যুগে সকল কালে সকল ভৌগলিক সীমানার জনগণের জন্য সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য হযরত মুহাম্মদ সা. সর্বোত্তম আদর্শ। তার আদর্শের মাঝে মানুষের ইহ-পরকালীন মুক্তির দিশা রয়েছে। তিনি পৃথিবীতে শান্তি মুক্তি, নিরাপত্তা, স্বস্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা দিয়ে গেছেন। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, সাম্প্রদায়িকতা, জুলুম নির্যাতনসহ সকল প্রকার অন্যায়, অনাচারের মূলোৎপাটন করেছিলেন। তিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজও তার রেখে যাওয়া আদর্শ পৃথিবীর মানুষের মুক্তির জন্য অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা ইয়াহয়া মাহমুদ ঢাকা, প্রফেসর ড. শাহ আলম, শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মাওলানা তাহমীদুল মাওলা ঢাকা, মাওলানা আবু সালেহ কুতবুল আলম ভাইস প্রিন্সিপাল দারুস সুন্নাহ কামিল মাদরাসা সোবহানীঘাট সিলেট, শায়খ বদরুদ্দীন আল মাদানী, মাও. কবি মুসা আল হাফিজ, মাওলানা মাহফুজ আহমদ ইংল্যান্ড, অধ্যাপক আব্দুস সবূর মহাসচিব আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম, মাওলানা আবদাল হোসেন খান প্রিন্সিপাল বানিয়াচং আলিয়া মাদরাসা, শায়খ সাঈদ বিন নুরুজ্জামান আল মাদানী ইমাম কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ, মাও হারুনুর রশীদ ইমাম সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
মাওলানা মতিউর রহমান ইমাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাফিজ মাওলানা হুজায়ফা চৌধুরী ইমাম দরগাহে হযরত শাহজালাল জামে মসজিদ, মাও. মাহবুব শিরাজী, মুফতি জাবের আল হুদা চৌধুরী সভাপতি হবিগঞ্জ যুব উলামা পরিষদ, সিলেট জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দীন সিলেট, মাওলানা কাজি লুৎফুর রহমান ইংল্যান্ড, মাও. মুফতি জমিরুদ্দীন, মাও. আব্দুল কাদির মাসুম, মাও. হামিদুর রহমান আল মাদানী প্রমূখ। সমগ্র প্রোগ্রাম টি উপস্থাপন করেন মাও. হাফিয আবদুল মুকতাদির, মাও. আহমদ শামছুদ্দিন এবং মাও. মাসরুর আহমদ। কনফারেন্স শেষে ‘সিলেট ঘোষণা’ পাঠ করেন মাও. শাহ নজরুল ইসলাম।
-এএ