আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের জান্তা সরকার বলছে, পাঁচ হাজার আন্দোলনকারীকে মুক্তি দেওয়া হবে। গত ১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী। তারপরই দেশজুড়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে রাজপথে নামে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দমন করতে কঠোর অভিযান চালায় জান্তা সরকার। সে সময় হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানা কয়েক মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দেশটিতে হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। সড়কের আন্দোলনকারী থেকে প্রান্তিক গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র চলে ব্যাপক ধরপাকড়। স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ অক্টোবর) মিয়ানমার জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং আন্দোলনকারীদের মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জানা গেছে, অক্টোবরের শেষের দিকে থাদিংউত উৎসব উপলক্ষে মোট পাঁচ হাজার ছয়শ ৩৬ বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
চলতি মাসের শেষের দিকে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এসিয়ান ন্যাশন্সের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে জান্তাপ্রধানকে বাদ দিয়ে অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই ঘটনার পরই জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এলো। শনিবার (১৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য এটি ছিল প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।
আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রুনেই বলছে, আগামী ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবরের সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটি বলছে, মিয়ানমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারায় অনেক জোট সদস্যের চাপে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মিন অং হ্লাইংয়ের পরিবর্তে কাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সে বিষয়টি পরিস্কার করা হয়নি।
মিয়ানমারের স্থানীয় পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ১১শর মতো মানুষ নিহত হয়। আটক করা হয় আট হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।
চলতি বছর জুলাই মাসে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি দেয় সাংবাদিক, সমালোচকসহ দুই হাজারের মতো বিক্ষোভকারীকে। তবে এবার কাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট করে বলেননি মিয়ানমার জান্তাপ্রধান। বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় কারা কর্তৃপক্ষও।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি