আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দীর্ঘ ১৭ মাস পর আজ রোববার খুলছে প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশব্যাপী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন উচ্ছ্বাস রয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যবিধি ও সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অনেক অভিভাবক।
যদিও স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা খুলে দেওয়ার আগে সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে দফায় দফায় নির্দেশনা। এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে প্রায় সাত শতাধিক স্কুল-কলেজ পাঠদানে যেতে পারছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। একই শঙ্কা প্রকাশ করেছে জনস্বাস্থ্যবিদ ও অভিভাবকদের একাংশ। যদিও তারা চান স্থবির শিক্ষাব্যবস্থা আগের অবস্থায় ফিরে আসুক।
করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি অন্তত ৮০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীকে টিকাদানের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। কমিটি মনে করছে, করোনার শুরু থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার নজির রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বেলায় এই শঙ্কা আরও বেশি।
তবে গতকাল শনিবার জামালপুরে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘সংক্রমণ বেড়ে গেলে ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ একই দিন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক সিলেটে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে বসে টিফিন খেতে পারবে না।’ একই সঙ্গে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অভিভাবকদের ভিড় না করার অনুরোধ করেন তিনি।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, করোনার কারণে ৫৪৩ দিনের বন্ধে অসংখ্য শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। অনেকের বাল্যবিয়ে হয়েছে।
শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী। তাদের অনেকের জন্য স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্টারনেট প্রযুক্তির দুর্বলতায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা শহরের চেয়ে ব্যাপক পিছিয়ে পড়েছে। অনলাইন দুনিয়ায় আসক্ত হয়ে অনেকে বিপথে চলে যাচ্ছে। এসব বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিগ্রাহ্য।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে দক্ষতা ও কর্মমুখী শিক্ষা দ্রুত চালু করা হবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আশা, করোনায় শিক্ষার ওপর দিয়ে যে ধকল গেছে স্কুল-কলেজ খোলার পর তা দ্রুত কাটিয়ে উঠবে।
করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে করা হয় ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। একই দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি হিসেবে ১৯টি নির্দেশনা জারি করে মাউশি। এসব নির্দেশনা মেনেই প্রস্তুতি নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। একই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা করে ১৬ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
-এএ