আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় আলোচকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা গেলে অনেক সামাজিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
তিনি বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
আজ রোববার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে তার অফিস কক্ষে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়মিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপ, মতবিনিময় সভা ও আলোচনা সভার আয়োজন করে যাচ্ছে।
জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এ দেশকে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিষয়ে আমাদের সরকার সজাগ রয়েছে।
দেশে যাতে কোনোভাবেই উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ফিরে না আসে- এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে মসজিদের খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা তাদের আলোচনা, বয়ান ও খুতবায় মানুষকে মাদক, বাল্যবিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা, ভিন্ন ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সহ নানাবিধ সামাজিক সমস্যার কুফল বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে বক্তব্য রাখছেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, দেশে ইতোমধ্যে ৫৬০টির মধ্যে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশিষ্ট মসজিদ সমূহ চালু শিগগিরই চালু হবে। এসব মসজিদের প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় আলোচকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা গেলে অনেক সামাজিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র মূলনীতি লিপিবদ্ধ করেছিলেন। ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। বলেন, বিভিন্ন সময় স্বার্থান্বেসী মহল বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুন্দর পরিবেশকে নস্যাৎ করতে চায়। এ বিষয়ে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ এর চেয়ারপারসন সুলতানা কামালের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন আমরাই পারি জোট এর কো চেয়ারম্যান এম বি আখতার, নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক, সদস্য রাবেয়া বেগম, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর মুবিনুর রহমান, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ট্রেইনিং কো অর্ডিনেটর সুরাইয়া পারভীন, প্রোগ্রাম অফিসার মারজিয়া হাসান প্রভা প্রমুখ।
সাক্ষাতকালে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ এর পক্ষ থেকে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কর্তৃক নারীর প্রতি সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা, ভিন্ন মতাবলম্বী জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় স্থাপনা বাড়িঘর ধ্বংস ভয়-ভীতি প্রদর্শন মূলক বক্তব্য বন্ধ করার জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবর বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সাক্ষাতকালে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলাম পিএইচডি উপস্থিত ছিলেন।
-এটি