আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কৃষিপ্রধান দেশ গাম্বিয়া। এটাকে নদীপ্রধান দেশ বললেও ভুল হবে না। কারণ এ দেশের নামকরণ করা হয়েছে নদীর নামে। গাম্বিয়া একটি নদীর নাম।
এটি দেশটির মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে পতিত হয়েছে। বিশাল এই নদীর তীরজুড়ে সারা বেলা খেলা করে রংবেরঙের পাখি। সে হিসেবে এটাকে পাখির দেশও বলা যায়। বর্তমানে এর রাষ্ট্রীয় নাম গাম্বিয়া ইসলামী প্রজাতন্ত্র।
এর অবস্থান আফ্রিকা মহাদেশে। বলা হয়ে থাকে, সেখানকার মূল ভূখণ্ডের ক্ষুদ্রতম দেশ এটি। উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে সেনেগাল দ্বারা পরিবেষ্টিত। পশ্চিমে আছে আটলান্টিক মহাসাগর। সাগর উপকূল থেকে প্রায় মহাদেশের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার অভ্যন্তর পর্যন্ত চলে গেছে গাম্বিয়া। তবে এর সর্বোচ্চ প্রস্থ মাত্র ৫০ কিলোমিটার।
এ দেশের রাজধানী বাঞ্জুল। বৃহত্তম শহর সেরেকুন্দা। সুজলা সুফলা এই দেশের মোট আয়তন ১০ হাজার ৩৮০ বর্গ কিমি। সেখানে বাস করে ২০ লাখ ৯২ হাজার ৭৩১ জন মানুষ। (সূত্র : ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক)
এখানকার ৯৫.৭ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী, যাদের সিংহ ভাগ মালেকি মাজহাবের অনুসারী। পাশাপাশি দেশটিতে বাস করে রোমান ক্যাথলিক এবং প্রটেস্ট্যান্ট সমপ্রদায়ের খ্রিস্টানরাও।
অর্থনৈতিক দিক থেকে গাম্বিয়া খুব সচ্ছল দেশ নয়। দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দরিদ্র। মাছ ধরা দেশটির অন্যতম প্রধান পেশা। তাদের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলারেরও কম। এ দেশের প্রধান উৎপাদিত শস্য এবং প্রধান রপ্তানি পণ্য চীনাবাদাম। এ ছাড়া পর্যটনশিল্পও তাদের অন্যতম আয়ের উৎস। আটলান্টিক সাগরের উপকূলের সমুদ্রসৈকতগুলোতে ঘুরতে ও গাম্বিয়া নদীর বিচিত্র পাখপাখালি দেখতে পর্যটকরা গাম্বিয়াতে আসেন।
গাম্বিয়া একসময় ছিল পর্তুগিজ উপনিবেশ। ১৯০০ শতকে এটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৯৬৫ সালে দেশটি থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর দেশটি একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র হিসেবে গণ্য হয়। ১৯৯৪ সালে একটি রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হয় এবং সামরিক নেতা ইয়াহিয়া জাম্মেহ তার স্থান নেন। জাম্মেহ পরবর্তীকালে গাম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজয়ী হন। ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর দেশটিকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।
তবে ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হলেও দেশটিতে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের অধিকারও রক্ষিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া। তিনি বলেন, পোশাকের ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে না। আমরা একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হব, যেখানে সব নাগরিকের অধিকার রক্ষিত হবে।
খুব বড় দেশ না হয়েও মিয়ানমারের মুসলমানদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল গাম্বিয়া। যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এটি ঈমানেরও দাবি। মহান আল্লাহ তাদের এই প্রচেষ্টা কবুল করুন।
-এটি