আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া প্রজ্ঞাপন ও অনুমতিপত্র তৈরি করে জনবল নিয়োগ ও ভুয়া করোনা পরীক্ষার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
বুধবার ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁও এবং ঝালকাঠি জেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- টিএসকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আলামিন, চেয়ারম্যান আবুল হাসান তুষার ও মার্কেটিং ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহিন মিয়া। তাদের নামে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, একটি প্রতারক চক্র টিএসকে গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান টিএসকে হেলথ সার্ভিস নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান বানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর একটি আবেদন করে। সেখানে বাংলাদেশের আটটি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৯২টি উপজেলা এবং চার হাজার ৫৬২টি ইউনিয়নে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করতে তাদের মোট পাঁচ হাজার ১২৬ জন সম্মুখ যোদ্ধা প্রস্তুত বলে উল্লেখ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভুঁইফোড় এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনো অস্তিত্ব না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয় থেকে কোভিড টেস্ট, লোক নিয়োগ, ক্যাম্প স্থাপনের অনুমতি তারা পাবে না বুঝতে পেরে জালিয়াতি করে। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব জাকিয়া পারভীনের সই ও সিল জাল করে নিজেরাই বুথ স্থাপন, স্যাম্পল কালেকশন, লোক নিয়োগ এবং ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দিয়ে দেয়। এই ভুয়া অনুমতিপত্র দেখিয়ে ঢাকা এবং ঝালকাঠি জেলার উপজেলা কো-অর্ডিনেটর ও ইউনিয়নের ফিল্ড অফিসার পদে বিভিন্ন জনকে নিয়োগ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
ডিবি বলছে, চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল্লাহ আলামিন সিআইবি (কেয়ার গিভারর্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে) এর মার্কেটিং ম্যানেজার এবং আবুল হোসেন তুষার আলফালাহ ইসলামী ব্যাংকের রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতো। আগে স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতাকেই তারা তাদের অপকর্মে ব্যবহার শুরু করেছিল।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ট্যাক্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের জাল নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, কোম্পানির প্রোফাইল বানানোর জন্য এক হাজার টাকা, বিভিন্ন লোগো সম্বলিত আবেদনপত্র প্রিন্ট করার জন্য এক হাজার টাকা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্য ২০০ টাকাসহ মোট আড়াই হাজার টাকা বিনিয়োগ করে সারা দেশে ১০০টি ক্যাম্পাস স্থাপন করে তারা। প্রতিটি ক্যাম্পাসের ডিলারশিপ দেওয়ার নাম করে তারা অন্তত দুই লাখ টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করছিল।
একই সঙ্গে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে শিক্ষার্থী ও যুবকদের ১০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের নামে আরও কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল।
-এএ