আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না।
করোনার কারণে নয় বরং জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংসের জন্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জাতিকে মেধাহীন করার চক্রান্ত চলছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, হাটবাজার, কলকারখানা, গণপরিবহন ও বিনোদন কেন্দ্রসহ সবকিছু খোলা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন? তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে ২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্তরে সবধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা নূরুল করীম আকরাম, উত্তর সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ সেক্রেটারী আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ডা. শহিদুল ইসলাম ও মুফতী ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিশ্বের যে সকল দেশে করোনা মহামারি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সে দেশগুলোতেও ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অধিকাংশ জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও বিশেষজ্ঞগণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
কিন্তু সরকার সেদিকে কোন কর্ণপাত করছে না। তিনি বলেন, দেশের অভিভাবকগণও আমাদের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে। আমরাও শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের কাছে বার বার দাবি জানিয়ে আসছি। এখন দেশের ভবিষ্যৎ-এর কথা চিন্তা করে আমরা রাজপথে নেমে এসেছি। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে পর্যায়ক্রমে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন’ মর্মে উত্থাপিত প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এতে নতুন মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পথ চরমভাবে সংকুচিত হবে। এটা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। দেশকে ইসলামশূণ্য করার অংশ হিসেবেই এধরণের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, এদেশ আস্তিকদের দেশ। এদেশকে নাস্তিকদের হাতে ছেড়ে দেয়া হবে না।
প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন; করোনায় যখন পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত তখন সরকার জোর করে দেশ চালানোর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। সরকার জনগণের সরকার নয়, ভোট ডাকাতি ও রাতের আধারে ভোট চুরির সরকার। তিনি জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মানবসম্পদ ধ্বংস করার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। তিনি অবিলম্বে কওমী মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া দাবি জানান।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রীর বক্তব্যে বুঝা যায়, সরকার করোনার জন্য নয়, বরং আন্দোলনের ভয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। সরকার ক্ষমতার স্বার্থে যা করার তাই করছে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছে। এমনকি অনেকে অর্থাভাবে হকারিও করছেন। যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এ অবস্থা থেকে দেশের শিক্ষা সেক্টর রক্ষায় অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
-এটি