বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

ইসরায়েলিদের ‘ভাড়াটে’ হওয়ার রায় প্রত্যাখ্যান ফিলিস্তিনিদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় উচ্ছেদের মুখে পড়া ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের নিয়ে অতি স্পর্শকাতর মামলাটিতে কোন স্পষ্ট রায় দেয়নি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত।

বিবিসি জানায়, সোমবার ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্ট দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি টানতে একটি রুলিং দেওয়ার কথা ছিল। তা না করে আপোষরফার আহ্বান জানিয়েছে।

তারা প্রস্তাব দিয়েছে, যে চারটি ফিলিস্তিনি পরিবার শেখ জাররাহতে তাদের বাড়িতে থাকতে পারবে— যদি তারা এটা স্বীকার করে নেয় যে একটি ইসরায়েলি কোম্পানি ওই জমির মালিক ছিল।

আদালতের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭০টিরও বেশি ফিলিস্তিনি পরিবারের ‘সংরক্ষিত ভাড়াটে’র মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে, এবং তারা যদি ভাড়া দেওয়া অব্যাহত রাখে তাহলে উচ্ছেদ করা যাবে না।

কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এ ধরনের কোন অযৌক্তিক আইন আগেও প্রত্যাখ্যান করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট শেখ জাররাহর বাসিন্দা ফিলিস্তিনিদের একটি তালিকা সাতদিনের মধ্যে দিতে বলেছে। যার অর্থ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অন্তত সাতদিন পিছিয়ে দেওয়া হলো।

এ উচ্ছেদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মে মাসে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। যার জের ধরে ইসরায়েল ও হামাসের ১১ দিনের রক্তাক্ত যুদ্ধের রূপ নেয়। এ ঘটনায় ২৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

ইসরায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের একটি অঞ্চল হচ্ছে এই শেখ জাবরাহ। জেরুসালেম শহরের প্রাচীন অংশ ও পবিত্র স্থানগুলোর কাছাকাছিই এই এলাকাটির অবস্থান। এই এলাকার জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে।

এখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার জন্য ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে চেষ্টা করে চলেছে। এই ফিলিস্তিনিরা এখানে বসবাস করছে দশকের পর দশক ধরে। পরে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে অনেক বসতি দখল করে ইসরায়েলিরা।

ইসরায়েল মনে করে পুরো জেরুসালেম শহরটিই তাদের রাজধানী। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকাংশই এ ধারণাকে স্বীকৃতি দেয় না।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা চান, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হবে এই পূর্ব জেরুসালেম।

শেখ জাররাহর কিছু ফিলিস্তিনিকে সংরক্ষিত ভাড়াটের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। মোট ১৭টি পরিবারের জন্য এ ব্যাপারে একটি চুক্তিও হয়েছে ১৯৮২ সালে।

তবে এর মাধ্যমে কার্যত ইহুদি গোষ্ঠীগুলো উনবিংশ শতাব্দীর যেসব জমির দলিল উপস্থাপন করেছিল, সেগুলোরই যথার্থতা স্বীকার করে নেওয়া হয়।

ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো পরে এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিরা যে চুক্তিতে সই করছে তাতে কী আছে তা জানতো কিনা— তা নিয়েও সংশয় আছে।

জাতিসংঘ বলছে, সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জাররাহতে বসবাসকারী সব ফিলিস্তিনি পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করেননি, এবং যে চুক্তি নিয়ে তারা দরকষাকষি করছিলেন তাতে পরিবারগুলো কখনো সম্মতি দিয়েছেন বা তাদের সঙ্গে কোন আলোচনা হয়েছে— এমনটাও মনে হয়নি।

১৯৯০ এর দশকের প্রথম দিকে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয়, এবং ইহুদি ট্রাস্টগুলো তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে।

ইসরায়েলি দখলদাররা ১৯৬৭ সাল থেকে এই এলাকায় ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে কমিয়ে নিজেদের জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। পাঁচ দশক ধরে শেখ জাররাহ ও তার সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি বসতি গড়ে উঠেছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ