নুরুদ্দীন তাসলিম।।
গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে প্রাথমিক জবানবন্দি দিয়েছে আল্লামা তাকী উসমানির ওপর হামলার চেষ্টা চালানো ঘাতক আসেম লায়েক। পুলিশের কাছে অভিযুক্ত জানিয়েছে, ‘পারিবারিক কলহের জেরে সে বাসা থেকে বিরক্ত হয়ে বের হয়। এরপর নামাজ পড়ে দোয়া নেওয়ার জন্য হুজুরের কাছে দেখা করতে আসে। এসময় তল্লাশি চালাতে গিয়ে গার্ড তার কাছে অস্ত্রের সন্ধান পায়’। খবর জিও নিউজের।
জবানবন্দিতে সে আরো জানিয়েছে, ‘বাসা থেকে ঝগড়া করে সে ব্যাগে কাপর-চোপরসহ প্রয়োজনীয় আরো কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়। তাই তল্লাশির সময় গার্ড তার কাছে অস্ত্র পেয়েছেন।
এসএসপি কোরঙ্গি শাহ জাহান পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্দেহভাজনকে আটক করে। ঘাতকের কাছে থাকা ছুরিটি পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, তল্লাশির সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে চকোলেট, নতুন পোশাকসহ আরো কিছু জিনিস পাওয়া পাওয়া গেছে।
পুলিশ বলছে, ছুরিতে বিষ বা অন্য কোনও পদার্থ মেমানো হয়েছে কিনা তা জানতে ছুরিটি ল্যাবে পাঠানো হবে এবং রিপোর্টের পরে আরও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, আল্লামা তাকী উসমানীর ওপর হামলার এই ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে আসেম লায়েক নামের সেই ঘাতকের বিরুদ্ধে। এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে সেই ব্যক্তিকে।
উল্লেখ্য, আল্লামা তাকী উসমানীর উপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছে বৃহস্পতিবার বাদ ফজর । তবে তিনি নিরাপদ রয়েছেন। হামলার পর তিনি নিজেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
অডিও বার্তায় ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লামা তাকী উসমানী বলেন, ‘ফজরের পরে একজন এসেছিলেন আমার সাথে একান্তে সাক্ষাত করতে। কথা বলার জন্য আমি তার নিকটবর্তী হলে সে পকেট থেকে চাকু বের করে , এসময় আমার আশপাশের লোকেরা তাকে আটক করেন। আল্লাহর শুকরিয়া আমার কিছু হয়নি, আমি নিরাপদ আছি’।
‘আক্রমণকারীর ব্যাপারে তদন্ত চলছে, সে কে ছিল, কেন এসেছিল, তদন্ত শেষেই স্পষ্ট জানা যাবে তার আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিল?
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানিয়েছেন, আল্লামা তাকি উসমানির ওপর হামলা চেষ্টার সময় ফজরের পর আমিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম।
ফজর পড়ে হুজুর বসেছিলেন,দু’একজন ছাত্র হুজুরের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন, আমরা কয়েকজন পাশে বসে ছিলাম, এমন সময় একজন হুজুরের সাথে দেখা করতে আসেন। তার হাতে গিফট পেপারে কিছু একটা মোড়ানো ছিল। হুজুরের সাথে সে কি বিষয়ে কথা বলছিল তা আমরা বুঝতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে গার্ড আমাদেরকে জানালেন, সে হুজুরের সাথে আলাদা কথা বলার অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু হুজুর বলেন আমি আপনাকে চিনি না আপনার সাথে কিভাবে কথা বলতে পারি। একথা বলে হুজুর কিছুটা পিছিয়ে এলে ঘাতক চাকু বের করে, গার্ড তা দেখতে পেয়ে সাথেসাথে তাকে ধরে ফেলে ও পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনার পর হুজুর তাৎক্ষণিক সেখান থেকে বাসায় চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঘাতক হামলার চেষ্টা করছিল, সে ছুরি বের করেছিল, তবে সে হামলা করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, দুই বছর পূর্বে মার্চ মাসে দারুল উলূম করাচিতে মুফতি তকি উসমানীর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। গাড়িতে তিনি, তার স্ত্রী ও দুই নাতি-নাতনিও ছিলেন। হামলায় তার দুইজন গার্ড শহীদ হয় এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মাওলানা আমির শেহাব ও মুফতি তাকী উসমানী আহত হন।
এনটি