আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দোতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মা-বাবা ও দুই বোনের লাশ দেখে কাঁদছিলেন ৯ বছর বয়সী শিশু মিম। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার কেউ নেই। স্বজন হারানোর কান্না থামছেই না। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ির বাংলাবাজার নৌপথে দুই নৌযানের দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিম। দুর্ঘটনায় তার বাবা মনির মিয়া, মা হেনা বেগম, বোন সুমী ও রুমি মারা গেছেন।
মিমের বাড়ি খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার পারুখালি এলাকায়। মিমের বাবা নিহত মনির মিয়া তার পরিবার নিয়ে থাকতেন ঢাকার মিরপুরে। সেখানে টেইলার্সের দোকান তার।
রোববার দুপুরে মিমের দাদি মারা যান। দাদির নাম বলতে পারছে না মিম। দাদির লাশ দেখতে গ্রামে যাচ্ছিল মিমের পরিবার। সকাল পৌনে ৭টার দিকে অন্তত ৩২ যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট শিমুলিয়া ঘাট থেকে শিবচরের বাংলাবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাংলাবাজার ঘাটে নোঙর করা বালুবোঝাই শিফান শায়হান নামের বালুভর্তি বাল্কহেডে ধাক্কা খায় স্পিডবোটটি। এতে ঘটনাস্থলেই ২৬ যাত্রী প্রাণ হারান।
স্থানীয় লোকজন পাঁচ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশ কর্মীরা লাশ উদ্ধার করে কাঁঠালবাড়ির ইয়াছিন মাদবরকান্দি গ্রামের দোতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাখেন। দাদির লাশ দেখতে যাচ্ছিল মেয়েটি। এখন মা-বাবা দুই বোনের লাশ নিয়ে তাকে ফিরতে হচ্ছে।
মৃত ২৬ জনের মধ্যে আছেন মিমের পরিবারের চারজন। আর জীবিত উদ্ধার হন মিম। প্রথমে আহত অবস্থায় মিমকে পাচ্চর রয়েল হাসপাতালে নেয়া হয়। একটু সুস্থ হলে দোতরা স্কুলের মাঠে আনা হয় মিমকে। মা, বাবা, দুই বোন নেই জেনে তার কান্না আর থামছিল না।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান। তিনি লাশের সারি থেকে মিমের মাধ্যমে মনির, হেনা, সুমী ও রুমির লাশ শনাক্ত করেন।
ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের খরচে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে মিমসহ নিহত মনির, হেনা, সুমি ও রুমির মরদেহ তাদের নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
এনটি