জুনায়েদ আহমদ: দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, দাঁড়ি ইসলামের অন্যতম শি'আর বা প্রতীক। দাড়ি পুরুষের শোভা। পুরুষের সৌন্দর্য। সমস্ত নবী-রাসুল দাড়ি রেখেছেন। দাড়ি ইসলামের স্বতন্ত্র ও মৌলিক একটি বিধান। দাড়ি রাখা ওয়াজিব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ি রাখার ব্যাপারে আদেশ করেছেন। দাড়িকে মর্যাদা প্রদান করতে হবে। যারা দাড়ি রাখে তাদের হেয় করা যাবে না। সম্প্রতি দাড়ি থাকার কারণে ইমরান হোসাইন ইমনকে চাকুরী না দিয়ে অমার্জনীয় অপরাধ করেছে আড়ং কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে আড়ংয়ের সমস্ত পণ্য বর্জন করতে হবে। যারা রাসূলের সুন্নাহ দাড়িকে হেয় করে তাদের কোন পণ্য মুসলমান ক্রয় করতে পারে না।
গতকাল ১৬ ই মার্চ মঙ্গলবার বাদ ইশা ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি ও সেবামূলক সংগঠন ‘মেখল ইসলাম প্রচার সংস্থার’ তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীরে হেফাজত আরো বলেন, দাড়ি থাকার কারণে চাকুরী না দিয়ে কার্যত নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহকে হেয় করেছে এবং রাসুলের তরীকার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে আড়ং কর্তৃপক্ষ। এটা কখনো বরদাশত করা যায় না। এর জন্য অবশ্যই তাদেরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৯০% মুসলমানের দেশে দাড়ি থাকার কারণে ইন্টারভিউতে পাশ করা সত্বেও একজন মুসলমানকে চাকুরী দেবে না তা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
ভারতে কুরআনের আয়াত বাতিলের রিট প্রসঙ্গে আমীরে হেফাজত বলেন, মানব জাতির মুক্তির সনদ পবিত্র কুরআনের আয়াত বাতিলের রিট করার অপরাধে কুখ্যাত কাফের শিয়া ওয়াসিম রিজভীকে ফাঁসি দিতে হবে। এটা বিশ্বের পৌনে দুইশো কোটি মুসলমানের দাবী। এই কুলাঙ্গারকে ফাঁসি না দেওয়া পর্যন্ত মুসলিমবিশ্ব শান্ত হবে না। এর বিরুদ্ধে আমাদের শান্তিপূর্ণ জোরদার আন্দোলন চলবেই।
আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, ভারতের আদালতে কোন ন্যায় বিচার নেই। ন্যায় বিচার থাকলে আদালত কখনো কুরআন বিরোধী ভিত্তিহিন রিট গ্রহণ করতো না। ওয়াসিম রিজভীর দায়ের করা রিট গ্রহণ করে ভারতের আদালত প্রকাশ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই রিট খারিজের ব্যবস্থা না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ওয়াসিম রিজভীকে মৌন সমর্থন দিয়েছে। এর জন্য ভারতকে মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
কুখ্যাত ওয়াসিম রিজভী কুরআনে বর্ণিত জিহাদের আয়াত নিয়ে আপত্তি তুলেছে। আমাদের মনে রাখতে জিহাদ ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান। জিহাদ সন্ত্রাস নয়, সন্ত্রাস জিহাদ নয়। জিহাদ জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই, জিহাদ হলো অন্যায় অবিচারের মোকাবেলায় ন্যায়ের লড়াই। জিহাদ শান্তি, জিহাদ মুক্তি। জিহাদ হলো জুলুম নির্যাতন আর সন্ত্রাস দমনের মাধ্যম। উপযুক্ত পরিবেশ হলে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের জিহাদ করতে হবে।
মুফতী হাবিবুর রহমান কাসেমীর সভাপতিত্বে মাহফিলে আরো বয়ান করেন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ডক্টর আ.ফ.ম. খালেদ হোসাইন, মাওলানা হাসান জামিল ঢাকা, মাওলানা আজিজুল হক জালালী, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী প্রমূখ।
মাহফিলে আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং আল-মানাহিল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা হেলালুদ্দীন বিন জমিরকে করোনায় আক্রান্ত লাশ দাফনসহ করোনা কালীন সময়ে মানবসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এমডব্লিউ/