আওয়ার ইসলাম: গতকালের তুলনায় দেশের করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে। একটানা বেশকিছু দিন ধরে শনাক্তের হার তিনের নিচে থাকলেও গত সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩.১৫-তে। এরপর বেশ কয়েকদিন এই হার আড়াইয়ের উপরে ছিল। কিন্তু সোমবার সেই হার বেড়ে ৩.৩০ শতাংশে দাঁড়াল। তবে গতকাল শনাক্তের হার ছিলো ২.৩৩ হয়েছিল।
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস (কভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন আট হাজার ৩৫৬ জন। ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরো ৩৬৬ জন। ফলে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৭ জনে।
আজ সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অরিতিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১৪টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৭টি, জিন-এক্সপার্ট ২৯টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৬৮টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমৃনা সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৫১জনের। আর মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ হাজার ১০৩টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৬টি।
ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৯২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৯২ হাজার ৫৯ জন।
এতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৫০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত বছরের ৪ এপ্রিলের পর ৯ জানুয়ারি সর্বপ্রথম শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ঘরে নামে। এরপর ১৭ জানুয়ারি ৪ শতাংশের ঘরে আসে। তার পরের দুদিন সামান্য বেড়ে ৫ শতাংশ হারে রোগী শনাক্ত হয়। ২০ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শনাক্তের হার থাকে চার শতাংশে। যদিও এর মাঝে একদিন এই হার ৩ শতাংশে নেমেছিল। এরপর ২৯ জানুয়ারি শনাক্ত হয় ৩.৭৬ শতাংশ।
গত ৩১ জানুয়ারি রোববার শনাক্তের হার ৩.০২ শতাংশ। ৩ ও ৫ ফেব্রুয়ারিতে শনাক্তের হার নেমেছে যথাক্রমে ২.৯২ ও ২.৭৯ শতাংশে। ৬ ফেব্রুয়ারি সেই শনাক্তের হার সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৫১ শতাংশে নেমেছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার শনাক্তের হার গত দশ মাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শনাক্তের হার দাঁড়ায় ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারিও একই শনাক্ত হার ছিলো।
বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৭ জনের মধ্যে ৪জন পুরুষ ৩ জন মহিলা। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫ জন আর রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে একজন করে রয়েছেন। আজকের মৃত্যুর সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। এই পর্যন্ত পুরুষ ৬ হাজার ৩২৫ এবং নারী দুই হাজার ৩১ জন মারা গেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গতবছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছরে ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
-এটি