আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, মুসলিম উম্মাহর ঈমান আকিদা রক্ষায় কুরআন-সুন্নাহর বাণীর প্রচার-প্রসার এবং দীপ্ত কণ্ঠে হক্ব কথা বলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। হক্ব কথা বলায় যদি কোন নাস্তিক মুরতাদের গায়ে আগুন জ্বলে তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা। হক ও সত্যের পয়গাম সর্বত্র পৌছিয়ে দেওয়া ওলামায়ে কেরামের উপর রাসূল (সা.) কর্তৃক অর্পিত জিম্মাদারী।
এ জিম্মাদারী পালনে আমরা সামান্যও পিছপা হবো না। ইসলাম বিরোধী বহুমুখী ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় প্রকৃত হক্ব কথা বলতে গিয়ে প্রয়োজনে ফাঁসির কাস্টে ঝুলতেও দ্বিধাবোধ করবো না।
গতকাল ১৫ ই ফেব্রুয়ারি সোমবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম অক্সিজেন শাখা কর্তৃক আয়োজিত শানে রেসালত সম্মেলনে হাজার হাজার তৌহিদি জনতার বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীরে হেফাজত আরো বলেন,
বিশ্বমানবতার মূক্তির দূত হযরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কলিজার টুকরা নবী। আমরা আমাদের প্রাণের চাইতেও নবীজি (সা.) কে বেশি মুহাব্বত করি। বিশ্বের যে কোন প্রান্তে নবিজি (সা.) এর অবমাননা করা হলে আমরা এর প্রতিবাদে জ্বলে উঠবো। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো। বিশ্বনবীর অবমাননা পৃথিবীর দেড়শো কোটি মুসলমান কখনো মেনে নেবে না।
তিনি আরো বলেন, কিছুদিন পূর্বে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাসূল সা. এর অবমাননাকর কার্টুন প্রদর্শন করা হয়েছিলো। আমরা এর প্রতিবাদে লক্ষ লক্ষ নবী প্রেমিক তৌহিদি জনতাকে সাথে নিয়ে হেফাজতে ইসলামের ব্যনারে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা সুস্পষ্ট দাবী জানিয়েছি- রাসূল সা. এর অবমাননাকর কার্টুন প্রদর্শনের অপরাধে ফ্রান্স সরকারকে বিশ্বের দেড়শো কোটি মুসলমানের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
হেফাজত নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিনের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন,মাওলানা জসিম উদ্দিন সাহেবকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত করা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত হওয়া সন্ত্রাসী মাসুমকে গ্রেফতারের পরও জামাই আদরে জেলখানায় রাখা হয়েছে।
পুলিশ তার বিষয়ে কোন রিপোর্ট দিচ্ছে না। সন্তাসী মাছুমকে আদালতে তুলা হলেও পুলিশ তার রিমান্ড আবেদন করেনি এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অন্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশের কোন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অনতিবিলম্বে মাওলানা জসিমউদদীনের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসী মাছুমকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।এবং এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অন্যদের খোঁজে বের করতে হবে। এভাবে ওলামায়ে কেরামের উপর হামলা হলে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে।
মাহফিলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম,কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা লোকমান হাকিম,হেফাজতের নায়েবে আমীর ও হাটহাজারী মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আলমপুরী ও মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীলের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বয়ান করেন,হেফাজতের সহকারী মহাসচিব মাওলানা হাসান জামিল ঢাকা,মাওলা খোরশেদ আলম কাসেমী, গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী,মুফতী হুমায়ুন খালভী, মাওলানা মোস্তফা নুরী, প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও নাজিরহাট মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতী হাবীবুর রহমান কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও হাটহাজারী উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির, কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও হাটহাজারী ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাফর আহমদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়্যব, মাওলানা মুহাম্মদ হারুন, মাওলানা আলী উসমান, ঝাউতলা মাদরাসা,বায়জিদ থানা হেফাজতের সভাপতি মাওলানা নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সামছুল হক জালাবাদী, মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন,মাওলানা মুসলেম উদ্দীন,মাওলানা ফয়জুল্লাহ,মাওলানা আশরাফ বিন ইয়াকুব প্রমূখ।
-কেএল