শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ২৫ নভেম্বর ‘আলেমদের নেতৃত্বেই কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন সম্ভব’ বইমেলায় ‘সঠিক নিয়মে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ বাংলা’-এর মোড়ক উম্মোচন সিলেটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমাবেশ শনিবার সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আলেম রাজনীতিবিদরা খালেদা জিয়াকে পেয়ে সেনাকুঞ্জ গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর মারকাযুন নূরে ১১ মাসে হাফেজ হল ১১ বছরের শিশু আফসার যেসব অভ্যাস নীরবে মস্তিষ্কের ভয়াবহ ক্ষতি করে বৈষম্য ও অন্যায় নির্মূলে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই: মজলিস আমীর আওয়ামীলীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান খেলাফত মজলিসের

‘ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জ্ঞান ও যাপনে পূণরোজ্জীবনের জন্যই অলিম্পিয়াড’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে এদেশে যেসব স্কলার ভিন্নমাত্রিকভাবে সক্রিয়, কবি,গবেষক মুসা আল হাফিজ তাদের অন্যতম। একজন সংস্কৃতিতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক হিসেবে তিনি যেমন বরেণ্য, তেমনি এর বিস্তার ও প্রসারে তিনি পালন করেন দাঈর ভূমিকা। এ ক্ষেত্রে তার কর্মধারা বৈচিত্র্যময়। বিদগ্ধ আলেম ও সাহিত্যিক মুসা আল হাফিজের মুখোমুখি আমরা হই ইসলামিক হিস্ট্রি এন্ড কালচার অলিম্পিয়াড নিয়ে কথা বলার জন্য। তিনি এর জাতীয় আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান। আওয়ার ইসলামের সাথে তার আলাপচারিতা ছিলো নিম্নরূপ-

আওয়ার ইসলাম: অলম্পিয়াড কী? কেন আয়োজন হচ্ছে এ অলিম্পিয়াড? কী এর উদ্দেশ্য?
মুসা আল হাফিজ: অলিম্পিয়াড গ্রিক একটি এলাকা থেকে শুরু হয়। অলিম্পিয়া নামক জনপদ থেকে। সেখানে বিবাদরত দুই রাষ্ট্রের মধ্যে মৈত্রীর নিদর্শন স্বরূপ আয়োজন হতো সপ্তাহব্যাপী খেলার। এটি ছিলো মানুষের সাথে মানুষের বন্ধন ও বিনিময় বাড়ানোর প্রয়াস। পরে এটি অলিম্পিয়া এলাকার নামে অলিম্পিয়াড বলে প্রাচারিত হয়। এর সাথে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নানা কালচারাল ব্যাপারাদি যুক্ত হয়। একেক জনগোষ্ঠী নিজেদের প্রথা ও বিশ্বাসের সাথে মিলিয়ে একে উদযাপন করতো। ফলে এ নিয়ে বিতর্কও হতো। এক সময় এটি নিষিদ্ধও হয় খ্রিস্ট্রিয় দুনিয়ায়।

আধুনিক কালে মূলত জ্ঞানগত নানা প্রতিযোগিতামূলক আয়োজনের ক্ষেত্রে অলিম্পিয়াড কথাটার ব্যাবহার হচ্ছে। দুনিয়া জোড়ে এটি চলমান। গণিত,অর্থনীতি,ইতিহাস,ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে এর আয়োজন হচ্ছে দেশে দেশে। এটি সর্বজনীন ও আন্তর্জাতিক চরিত্র লাভ করেছে।

ইসলামি হিস্ট্রি এন্ড কালচার অলিম্পিয়াড বাংলাদেশে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জ্ঞানগত ও আচারগত উজ্জীবনের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টা। এর উদ্দেশ্য আমাদের জীবন ও জগতকে সাজাতে ইসলামের ইতিহাস যে বার্তা দেয়, সংস্কৃতি যে শিক্ষা দেয়, তাকে জানা ও জানানো এবং এর গঠনমূলক অনুশীলনের প্রণোদনা বাড়ানো। এ মূলত ইসলামের জীবনাবেদনকে নিয়ে আমাদের এনলাইটেনমেন্টের লক্ষ্যে নিবেদিত।

আওয়ার ইসলাম: দুই হাজার বিশ - একুশের এ আয়োজনে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? কেমন আশা করছেন?
মুসা আল হাফিজ: সাড়া দেয়ার জন্য আসলে আমাদের সামাজিক ক্ষেত্র তৈরী হয়েই আছে। সেটা এ অর্থে, যে, ইসলামকে জানার আগ্রহ রয়েছে ব্যাপক। কিন্তু পদ্ধতি হিসেবে অলিম্পিয়াড যে একটি কার্যকর প্রক্রিয়া হতে পারে, সে সচেতনতা কম ছিলো। আল্লাহর রহমতে তা বাড়ছে। আমাদের প্রাথমিক প্রচেষ্টায় সারা দেশে কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবী সাড়া দিয়েছেন। যাদের মধ্যে বড় এক অংশ নারী। আমরা দশ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছি। যাদেরকে জ্ঞানগতভাবে আরো দক্ষ করার প্রশিক্ষণ জারি থাকবে। এবারের অলিম্পিয়াড এ আমরা দুই লক্ষ প্রতিযোগী আশা করছি।

তাদের প্রত্যেকেই সিরাত পড়বেন, ইসলামের ইতিহাস পড়বেন, ইসলামী সংস্কৃতি ও জীবনবাণী পাঠ করবেন। এটি করবেন অলিম্পিয়াড এ অংশ নেবার জন্য। কিন্তু এ পাঠ তাকে বদলে দিতে পারে গোটা জীবনের জন্য। এ ছাড়া আমরা কেবল বই পড়াচ্ছি,তা নয়। আমরা ওয়েবিনার, পাঠচক্র,সামষ্ঠিক অধ্যয়ন ইত্যাদির মাধ্যমে প্রশিক্ষণও নিশ্চিত করছি।

ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো সরকারী - বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা সাড়া দিয়েছেন। কলেজ লেভেলে সাড়া এসেছে অনেক বেশি। সবগুলো জেলাতেই কাজ চলছে, আলহামদুলিল্লাহ!

আওয়ার ইসলাম: তাহলে আপনারা শুধু অলিম্পিয়াড আয়োজন করছেন,তা নয়।বরং আরো অনেক দায়িত্ব পালন করছেন। এটা কি বলা যায়?

মুসা আল হাফিজ: হ্যাঁ, বলা যায়। আমরা একে জ্ঞানভিত্তিক একটি আন্দোলনের রূপ দিতে চাই। ফলে আমরা সেভাবে সবকিছু সাজিয়েছি। এমনকি পুরস্কারও । দেখবেন, আমরা প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা সমমূল্যের পুরস্কার দিচ্ছি। এর মধ্যে নগদ অর্থ আছে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনাখরচে পড়াশোনার সুবিধা আছে, বিশেষভাবে আছে দুই শত লাইব্রেরি। এটি আসলে একটি লক্ষ্যের অংশ। আমরা তরুণদের ইসলামবিষয়ক পাঠের অভ্যাস গড়তে প্রণোদিত করতে চাই, তাদের ধারণাগুলোকে জ্ঞানভিত্তিক করতে চাই। অজ্ঞতা ও ভুল জানার ফলে অনেক সময় তরুণরা ভালো করতে চেয়েও খারাপ করে বসে। আমরা চাই, পাঠ ও অধ্যয়নের বিস্তার। আমরা চাই, পাড়ায় পাড়ায় একেকটা লাইব্রেরি থাকুক। এমনকি প্রতিটি শিক্ষিত ঘরে।

আওয়ার ইসলাম: এতো বড় ইভেন্ট আয়োজন কীভাবে সম্পন্ন হচ্ছে?
মুসা আল হাফিজ: দেখেন, শূন্য থেকেই শুরু। আমরা কোনো তহবিল নিয়ে আয়োজন শুরু করিনি। গত বছর একটি আয়োজন হয়,যদিও সীমিত পরিসরে। এবার জাতীয় অবয়ব পেয়েছে। কিন্তু এ অবধি কাজ চলছে আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত খরচে। তবে ইতোমধ্যে পুরস্কার ও জাতীয় রাউন্ড আয়োজনের ক্ষেত্রে আমরা কিছু স্পন্সর পেয়েছি,আলহামদুলিল্লাহ! যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সোজলার পাবলিকেশন্স, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, রকমারি ডট কম ইত্যাদি।

ইভেন্ট বাস্তবায়নে সহযোগিতার প্রয়োজন বিস্তর এবং আমরা আশাবাদী, সেটা সেটা সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হবে। কিন্তু আমরা কেবল একটি ইভেন্ট নিয়েই কাজ করছি, তা নয়। অর্থাৎ ইভেন্ট সম্পন্ন হয়ে গেলে আমাদের কাজ সম্পন্ন, তা নয়। কারণ, একে এক জ্ঞানান্দোলনে রূপায়ন করার প্রয়োজন সুতীব্র।

আওয়ার ইসলাম: ব্যস্ততার মধ্যে আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
মুসা আল হাফিজ: ধন্যবাদ আপনাদেরও।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ