মাহমুদুল হাসান
বিশেষ প্রতিনিধি
শনিবার সন্ধ্যা ৭ টা বাজে ৩০ মিনিট। দেশ বরেণ্য আলেম, ঐতিহ্যবাহী দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার শাইখুল হাদীস,ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতীব আল্লামা শামসুল ইসলামের সার্বিক খোঁজ খবর নিতে ঢাকার পিজি হাসপাতালের আইসিউতে হাজির হয় আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর একটি বিশেষ টিম।
সেখানে গিয়ে তারা আল্লামা শামসুল ইসলামের সার্বিক চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজ খবর নেন। সাক্ষাতকালে আল্লামা শামসুল ইসলাম চোখ তুলে তাকালেন এবং সবাইকে চিনতে পেরেছেন বলে ইশারা করেন। বর্তমানে তিনি আগের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক আছেন। খাবার গ্রহণ, প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলতে পারছেন।
তাফসির পাগল আলেম আল্লামা শামসুল ইসলাম আওয়ার ইসলামের বিশেষ টিমের কাছ থেকে জানতে চান কিশোরগঞ্জের সার্বিক খোঁজখবর। প্রথমেই তিনি ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদে তার নিয়মিত তাফসিরের কথা জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে তাফসির চলমান কিনা ব্যাপারে কিছুক্ষন কথা বলেন, এবং তিনি এসে পবিত্র কোরআন শরীফের বাকি সূরাগুলোর তাফসির শেষ করবেন বলেন আশা ব্যক্ত করেন, আল্লাহ তায়ালা যেন সুস্থতা দান করেন এ জন্য দোয়াও চেয়েছেন ছাত্র, ভক্ত ও দেশবাসীর কাছে।
প্রসঙ্গ, আল্লামা শামসুল ইসলাম গত ১৮ জানুয়ারি (সোমবার) বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ঐতিহ্যবাহী দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার শাইখুল হাদীস,ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতীব আল্লামা শামসুল ইসলামের শারীরিক অবনতি হওয়ায় কিশোরগঞ্জ থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলামে নেয়া হয়। সেখানে দুদিন চিকিৎসা সেবা দানের পর ২১ জানুয়ারি ( বুধাবার) তাঁকে কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।
ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করলে আজগর আলী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখেছেন বলে তার জামাতা মাওলানা আমিনুল ইসলাম মামুন খবর নিশ্চিত করেন।
পরে ডাক্টারের পরামর্শ ক্রমে তাকে নেয়া হয় ঢাকার পিজি হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)তে আছেন।
আল্লামা শামসুল ইসলাম একজন বিচক্ষণ ও বর্ষীয়ান আলেমদ্বীন। প্রাণবন্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী। হাদীস শাস্ত্রের ওপর বিশেষ দক্ষতা থাকায় আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ায় ১৯৮৩ থেকে এ পর্যন্ত অত্যন্ত সুনামের সাথে পাঠদান দিয়ে আসছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে দ্বীনের প্রচারে তাঁর রয়েছে অসামান্য ভুকিকা। ফলে পুরো দেশেই তাঁর হাজারো ছাত্র ও ভক্ত রয়েছে।
এ ছাড়াও তিনি তাফসিরে শাস্ত্রেও অসামান্য দক্ষতা থাকায় ১৯৮৬ থেকে ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদে প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় কোরাআনে পাকের তাফসির করে আসছিলেন। সুর ফাতেহা থেকে শুরু করে বর্তমানে তিনি সূরা ইকরা পর্যন্ত তাফসির সম্পন্ন করেছেন। সুস্থ হয়ে ফিরে আসলে পুরো কোরআন শরিফের তাফসির সম্পন্ন হলে সবাইকে নিয়ে দোয়া আয়োজন করবেন বলে তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। তার তাফসিরেও হাজারো মহিলা দ্বীনের পথে ফিরে এসেছেন। এ জন্য কিশোরগঞ্জের মানুষের মধ্যমনি হিসেবে সবাই তাঁকে সমীহ করেন।
-কেএল