শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিন্ময়সহ ১৭ ইসকন সদস্যের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে জুমার পর বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের বিক্ষোভ অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন

মসজিদে নববির দৃষ্টিনন্দন মেহরাব ও তার ইতিহাস৷

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইয়াহইয়া বিন আবু বকর নদভী।।

মসজিদে নববির মেহরাব স্থাপত্য সভ্যতা, নির্মাণশৈলী এবং সৌন্দর্য শিল্পের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ফলে মসজিদে নববির মেহরাবগুলোতে অত্যন্ত নৈপূণ্যর সাথে খোদাই করে অংকিত ফুল ও বিভিন্ন কারুকার্যের সৌন্দর্য দেখে মসজিদে নববীর আশেক ও দর্শনার্থীরা মুগ্ধ না হয়ে পারে না। ১৪০৪ হিজরীতে বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ মসজিদে নববীর মেহরাবগুলোর সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য বর্ধন করেন।

আরবি ‘উকাজ, এবং আল-মাদিনা নিউজ ও আলজাজিরার এক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে মসজিদে নববীতে ছয়টি মেহরাব রয়েছে৷

এক—মেহরাবে নববি,
দুই—মেহরাবে ফাতেমি,
তিন—তাহাজ্জুদের মেহরাব,
চার—মেহরাবে উসমানি,
পাঁচ—মেহরাবে সুলায়মানি,
ছয়—মেহরাবে শাইখুল হারাম৷
ইসলামে সর্বপ্রথম মেহরাব নির্মান করেন ওমর ইবনে আবদুল আজীজ রহ.৷

মেহরাবে নববি৷ এটি পবিত্র রওজা শরীফের মধ্যে অবস্থিত৷ হুজুর সা._র যুগে বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতিতে কোনো মেহরাব ছিলোনা৷ ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহঃ সর্বপ্রথম প্রচলিত পদ্ধতিতে মেহরাব নির্মান করেন৷ কিবলা পরিবর্তনের পর হুজুর সা. যে স্থানে দাড়িয়ে সাহাবীদের নামাজ পড়াতেন, ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহ. সেইস্থানে এটি নির্মান করেন৷ তবে সুলতান কায়তাবাইয়ের শাসনকালে ৮৮৮ হিজরিতে মর্মর ও মার্বেল পাথর দ্বারা তা সংস্করণ করেন৷ পরবর্তীতে মেহরাবের মর্মর ও মার্বেল পাথর এবং তার রঙে ত্রুটি দেখা দিলে বাদশা ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ১৪০৪ হিজরিতে তা মেরামত করেন।

মেহরাবে ফাতেমি৷ এটি হযরত ফাতেমা রা. র হুজরা খানায় অবস্থিত৷ এ মেহরাবটি মেহরাবে নববীর সাথে অত্যন্ত সাদৃশ্যপূর্ণ৷ এবং এটি বাদশাহ মামলুকের যুগে নির্মিত হয়েছে৷

মসজিদ নববির তাহাজ্জুদের মিহরাবটি গম্বুজের উত্তর দিকে এবং ফাতেমা রা.র হুজরার পেছনে হুজুর সাঃ_র হুজরা খানার জায়গায় অবস্থিত। এটিই সেই জায়গা যেখানে হুজুর সা. তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন।

ইতিহাস প্রমাণ করে যে ইবনে নাজ্জারের যুগে ও মিহরাব তাহাজ্জুদ বিদ্যমান ছিল। তিনি ৬৪৩ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
বাদশাহ কায়তাবাই এটিকে সংস্কার করেছিলেন৷ এরপর খিলাফাতে উসমানিয়ার শাসক বর্গরা আরেকবার সংস্কার করেছিলেন৷ এই সংস্কারের সময় তাঁরা নির্বাচন করেছিলেন মূল্যবান লাল পাথরের টুকরা ৷ আর তাহাজ্জুদের আয়াতটি এতে স্বর্ণ দ্বারা খোদাই করে লিখা হয়। এই মিহরাব এখনও বিদ্যমান রয়েছে৷

আর মিহরাবে উসমানি, এটি মসজিদে নববির কিবলার দিকের দেয়ালে নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে ইমাম সাহেবরা এখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ান৷ ওমর ইবনে আবদুল আজিজ ওযালিদ ইবনে আবদুল মালিকের শাসনামলে ৯১ হিজরিতে ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান ইবনে আফফান রাঃ_র নামাযের জায়গায় এ মিহরাব তৈরি করেছিলেন, পরবর্তীতে ৮৮৮ হিজরিতে সুলতান কায়েতাবাই এটিকে সংস্কার করেন৷ এখনো মেহরাবটি ঐ রুপেই বিদ্যমান রয়েছে৷

মিহরাবে সোলাইমানি মসজিদ নববির মিম্বরের পশ্চিমে তৃতীয় স্তম্ভের নিকটে অবস্থিত। এটি নবম শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে নির্মিত হয়েছিল। এটিকে মেহরাবে হানাফী ও বলা হয়৷

এটি সুলতান সুলায়মান খাঁন, যিনি আল-কানুনি উপাধি দ্বারা পরিচিত ছিলেন, ৯৪৮ হিজরিতে নবায়ন করেন৷ সাদা এবং কালো মার্বেল পাথরের ফুলের কারুকার্যে সজ্জিত করেন। তখন থেকে এটি মিহরাবে সোলায়মানি নামে পরিচিতি লাভ করে৷

মেহরাবে শাইখুল হারাম৷ এটি দাক্কাতুল আগাওয়াত থেকে প্রায় চার মিটার উত্তরে অবস্থিত৷ রমজান এলে হারামের শাইখ তার ইমামের পিছনে তারাবী পড়ার জন্য এই মেহরাবের কাছে দাড়াতেন৷ পরবর্তীতে তা মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়৷ তারা এখানে তারাবী পড়তো৷ বর্তমানে এ মেহরাব অপসারণ করা হয়েছে৷ সূত্র: আরবি বিবিসি, আলজাজিরা, আল- মাদিনা নিউজ, উকাজ ও উর্দূ নিউজ৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ