আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশে কওমি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার সমস্যার সমাধান নিয়ে ‘মুসলিম ইয়ুথ সার্কেলে’র উদ্যোগে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে ছয় দফা দাবি পেশ করেন আয়োজকগণ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) দিনব্যাপী রাজধানীর ঢাকা ফকিরাপুলের হোটেল রাহমানিয়া রুফটপ রেষ্টুরেন্টে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাদরাসা দারুর রাশাদ এর প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ সালমান। মুসলিম ইউথ সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোহাম্মদ মনযূরুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মাননীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।
সেমিনারে বিশেষ ৬ টি দাবিসহ মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মুসলিম ইয়ুথ সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাওলানা সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর। প্রবন্ধে সরকার, সংশ্লিষ্ট মহল এবং দেশবাসীর প্রতি ৬ টি দাবি ও আহবান তুলে ধরেন।
৬ দফা আহবানগুলো হলো –
১. কওমি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা সহজ ও নিষ্কণ্টক করতে সরকারিভাবে কওমি সনদকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হোক।
২. কওমি শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথিবীর সকল দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিতে তাদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা সহজলভ্য এবং সকল আইনি জটিলতা নিরসন করা হোক।
৩. ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিশর, কাতার, বাহরাইন, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের বিভিন্ন ইসলামিক ইনস্টিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ক্রেডিট ট্রান্সফারের প্রক্রিয়া সহজ ও সহযোগিতামূলক করা হোক।
৪. একইভাবে এসব দেশের ইসলামিক ইনস্টিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী আদান-প্রদান (Student exchange)-এর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
৫. বিভিন্ন দেশের ইসলামিক ইনস্টিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রদত্ত স্কলারশিপ (বৃত্তি) গ্রহণের সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
৬. সরকারিভাবে কওমি সনদের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বিসিএস, পিএইচডি ও উচ্চতর গবেষণার সুযোগ করে দেওয়া হোক।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কওমী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহীদের নিয়ে বিশেষ এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রায় দেড়শ কওমি শিক্ষার্থী ও দায়িত্বশীল পর্যায়ের অনেক কওমি শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় দীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড এর মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আলী।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন – দাতব্য সংস্থা মারকাযুল ইসলামির চেয়ারম্যান মাওলানা হামজা ইসলাম, বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক শায়খ ড. আহমদ উল্লাহ। স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ এর সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ, আহছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম এর সহকারী অধ্যাপক শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ির দাওয়া বিভাগের মুশরিফ মাওলানা আবু নোমান আল-মাদানী, ইসলামিক ল রিসার্চ অ্যান্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার এর নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলাম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের পরিচালক ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ, সাইফুরসের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সাইফুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর মুহাদ্দিস মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান, দ্বীনিয়াত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতী সালমান আহমদ প্রমূখ।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিষয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করেছেন মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, সৌদি আরবে উচ্চশিক্ষা, মো. ওমর ফারুক ইবরাহিমী, দারুল উলুম করাচি ও দরুল উলুম দেওবন্দে উচ্চশিক্ষা। মুহাম্মাদ হাস্সান আরিফ, বাইরাইনে উচ্চশিক্ষা, ড. রুহুল আমিন রব্বানি, সহকারী পরিচালক ইসলামিক ল রিসার্চ সেন্টার, মালয়েশিয়ায় উচ্চাশিক্ষা, মাওলানা কাওসার জামিল, মাওলানা জুবায়ের গনী, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুসলিম ইয়ুথ সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। আয়োজকদের মধ্যে ব্যবস্থাপনার সার্বিক ছিলেন মুহাম্মদ এহসান সিরাজ, হাছিব আর রহমান, নাজমুল ইসলাম কাসিমী ও রোকন রাইয়ান।
এমডব্লিউ/