বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ময়মনসিংহ নগরবাসী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ আল-আমিন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি>

ময়মনসিংহে ব্যাপকভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়া জনগোষ্ঠী,তাদের আচরণ কিছুটা সন্ত্রাসী কায়দায় চাঁদাবাজির মতো,ফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে নগরবাসী। বিশেষ করে ময়মনসিংহ ব্রীজ বাস টার্মিনাল এলাকা,শম্ভুগঞ্জ বাস-টার্মিনাল চরপাড়া মোড়,গাঙ্গিনাপাড় মোড়,মাসকান্দা বাইপাস মোড়,টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড সহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টেই হিজড়াদের সাহয্যের নামে চাঁদাবাজির তাণ্ডব চলে।
নিয়মিত প্রশাসনের বিশেষ অভিযানের ফলে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও বন্ধ হচ্ছে না হিজড়াদের সাহয্যের নামে চাঁদাবাজি।

নগরবাসী এই সমস্যার সুরাহার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোড় আবদার জানিয়েছে,তাদের দাবি হিজড়ারা নিয়মিত সারা শহরে সন্ত্রাসী কায়দায় চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। যদি শহরের কোথাও বিয়ের আয়োজন করা হয় তাহলে সেখানে গিয়ে তারা বড় অংকের একটা চাঁদা দাবি করে বসে,ফলে প্রায়শই বিপাকে পড়েন বরযাত্রী সহ কণেপক্ষের লোকজন।

এছাড়াও কোন বিয়ের গাড়ি রাস্তায় আসামাত্রই গাড়িকে ঘিরে ফেলে এই হিজড়া সম্প্রদায়,অনেকের ধারণা শহরের বিশেষ ব্যাক্তিদের অদৃশ্য ইঙ্গিতেই করা হচ্ছে এসব চাঁদাবাজি। আবার অনেকেই ধারণা করছেন কিছু পুরুষরুপী কাপুরুষ হিজড়া সেজে এসব কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে।

এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে পহেলা জানুয়ারি শুক্রবারে,ঐদিন শহর থেকে একটি বিয়ের গাড়ি সাজিয়ে নেত্রকোনা জেলাধীন বারহাট্টার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে একটি বরযাত্রীদল,শম্ভুগঞ্জ বাজারে পৌছা মাত্রই বিয়ের বরযাত্রীর গাড়ি বহর হিজড়াদের আক্রমের শিকার হয়। প্রথমে বরযাত্রীর লোকজন ৫শ টাকা দিয়ে সরে যেতে বললে ৩ হাজার টাকার নিচে বরযাত্রীর গাড়ি ছাড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা।

পরে বিষয়টি কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদারকে মুঠোফোনে অবহিত করেন বরযাত্রীর সাথে থাকা একজন সাংবাদিক মো.কামাল। ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন মোবাইল-৩ কে পাঠানো হচ্ছে।

মো.কামাল বলেন,আমি কেন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলাম এবং পুলিশকে কেনো জানালাম,সেই জন্য হিজড়াদের মারমুখী আচরণ আর উলঙ্গ নৃত্যে আশ-পাশে লোকজনের জড়ো হয়ে যায়। সেই সাথে রাস্তার দুইপাশের সৃষ্টি হয় দীর্ঘ এক যানজট। অপরাধ একটাই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া।

মো.কামাল আরো বলেন,দুই হাজার টাকা দিয়ে হিজড়া সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রক্ষা পেলাম। শুভ কাজ বলে কথা তাই অসহায় এর মতো চলে গেলাম কারণ সাথে ছিল আমার স্ত্রী। এখানেই শেষ নয় ! ময়মনসিংহের হিজড়াদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পূর্নরায় আবারও নেত্রকোনায় হিজড়া সন্ত্রাসীদের হানা পড়ে বরযাত্রীর গাড়ীতে। এবারও নেত্রকোনা জেলা গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার শাকের আহম্মেদকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি বলেন দ্রুত থানাপুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছি। পুলিশ আসার আগেই হিজড়ারা সটকে যায় ১৫ শত টাকা নিয়ে।

তিনি বলেন, এভাবেই প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ এই সকল হিজড়াদের খপ্পরে পড়ে। ভুক্তভোগীরা মান-সম্মান ও সাথে থাকা আপনজনদের অপমানের ভয়ে হিজড়াদের দাবিকৃত চাঁদা দিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, হাট-বাজার, বাসট্রার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, নৌবন্দরগুলোতে এই হিজড়াদের অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলছে। নাড়ির টানে বাড়ী ফেরা মানুষদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে।

এমনকি স্ত্রীর সামনে স্বামীর কোলে বসে নোংরা কথা বলে “এই তুই আমার কাছে আসিসনি ? স্ত্রীর সামনে আমাকে না চেনার ভান করছিস!এই কথা শোনে স্বামী স্ত্রীর মাঝে সৃষ্টি হয় পারিবারিক কলহ যার ফলশ্রুতিতে সংসার ভাঙ্গার প্রান্তে এসে দাড়ায় অনেকের।

এভাবেই প্রতিনিয়ত ময়মনসিংহ মহানগর সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা,ইউনিয়নে এখন এক নতুন আতংক হিজড়া জনগোষ্ঠী,সাধারণ মানুষ দ্রুত প্রতিকার চায় প্রশাসনের কাছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ