বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

ফটিকছড়ি মাদরাসায় সন্ত্রাসী হামলায় আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর তীব্র প্রতিবাদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাউসার লাবীব: ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারস্থ মান্নানীয়ার পশ্চিম নানুপর দারুস সালাম ঈদগাহ মাদ্রাসা নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা হাসানের নেতৃত্বে হামলা, ভাঙ্গচুর ও বেশ কয়েকজন তৌহিদি জনতার আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা, জামিয়া বাবুনগরের পরিচালক, ইসলামী আইন বাস্তাবায়ন কমিটি ফটিকছড়ির পৃষ্ঠপোষক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

আজ ৪ জানোয়ারি দুপুরে ঘটনাপরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা এই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই৷ যারা পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্র মূলক ফটিকছড়ির শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে চায় তাদের দৃষ্টান্তমূলক মূলক শাস্তি চাই।

আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, দখলের উদ্দেশ্যে দারুচচ্ছালাম ঈদগাহ মাদ্রাসায় হামলার ঘটনা বরদাশত করা হবে না। দেশীয় ও বিদেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের রক্তাক্ত করে চরম দৃষ্টতা আর দুঃসাহস দেখানো হয়েছে।

হেফাজতের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সুশৃঙ্খলভাবে আকিদায়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আলোকে বেরলবী ও মাজার পূজারিদের ভ্রান্ত বিশ্বাস ও রুসূমাতের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশনা মেনে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। আমাদের আন্দোলনে কখনও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ভাঙচুর হয়নি।কোন হামলা ,হত্যা ও হানাহানি হয়নি৷

জামিয়া বাবুনগরের পরিচালক বলেন, বেদাতী মাজার পূজারীরা বিনা উসকানিতে কওমি মাদ্রাসার নিরীহ ছাত্র ও আলেমদের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ৯০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে বিশেষ করে আহলে হক তথা হাজারো আওলিয়া আর আলেমদের পদভারে পূণ্যভূমিতে খ্যাত ফটিকছড়ির মাঠিতে দারুচচ্ছালাম মাদ্রাসায় গুটিকয়েক ভন্ডরা মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে কোটি কোটি তাউহিদী জনতার কলিজায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সুতরাং মাননীয় সরকার বিশেষ করে ফটিকছড়ির এমপি মহোদয় ,ইউনো স্যার ,উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবী এ ন্যাক্কারজনক হামলার প্রকৃত দোষীদের দ্রুত সময়ে খুজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন৷ অন্যাতায় ফটিকছড়িতে যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসই দায়ী থাকবে৷

প্রসঙ্গত, ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারস্থ মান্নানীয়ার পশ্চিম নানুপর দারুচচ্ছালাম ঈদগাহ মাদরাসা নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা হাসানের নেতৃত্বে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা ও ভাঙ্গচুরের অভিযোগ ওঠেছে। হামলায় প্রায় দশ জন ছাত্র আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ সোমবার বিকেলে মাদরাসা নির্মাণে বাধা দিতে এসে এ হামলার ঘটনা ঘটায় তারা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো.আবু তৈয়ব,উপজেলা ইউএনও সায়েদুল আরেফিন, ফটিকছড়ি ওসি রবিউল হোসেন।

পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মাদরাসার ছাত্ররা জানায়, স্থানীয় যুবলীগ নেতা হাসানের নেতৃত্বে মাদরাসায় হামলা চালানো হয়। ট্রাক নিয়ে এসে মাদরাসার মালামাল তোলে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগও করেছেন তারা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, আমরা হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনি। তারপরই দেখি একজনের বুকে গুলি লেগে মাঠিতে পড়ে আছে। স্থানীয় রুহুল আমিন বলেন, হুজুুর থেকে চাঁদা চেয়েছেন হাসানের লোকজন। হুজুর টাকা দিতে অস্বীকার করায় ট্রাক এনে মাদরাসার মালামাল তোলে নিয়ে যেতে লাগলে, মাদরাসার ছাত্ররা বাধা দিলে তাদের মারধর করে। এরপর গুলির আওয়াজ শুনি। কয়েকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। প্রায় ছয় সাত জনের মত গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলেও জানান রুহুল আমিন।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা জানাতে চাইলে এলাকার সাইফুর রহমান জানান, পাঠান পাড়ার হাসান, মাদরাসা থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় এ হামলা করা হয়। গুলিবিদ্ধ একজনের অবস্থা আশঙ্কজনক বলেও জানান তিনি।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ