আল-আমিন(বাপ্পি)
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বেসরকারি বিনিয়োগ ও সরকারি তদারকিতে পিডিবির একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সুতিয়াখালির চরাঞ্চল এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেষে ১৭৪ একর জমির উপর ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশ বান্ধব সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে।
সবকিছু ঠিক থাকলে এই মাসেই এর উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণের কাজ। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধিনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলার সুতিয়াখালিতে, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে ব্যবহৃত বিদ্যুতের শতকরা দশ ভাগ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ‘সুতিয়াখালি ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুত প্রকল্প’ নামে বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩০ জুনের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কাজে জড়িত চীনা প্রকৌশলীরা নববর্ষের ছুটিতে দেশে যাওয়ায় পর করোনা দুর্যোগের কারণে সময় মতো ফিরে না আসায় সোলার প্লেট বসানো ও সংযোগ প্রদানের কাজ দেরি হয়।
প্রকল্প পরিচালক ও পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ গণমাধ্যমকে জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের অধিনে অফিস ভবন, ব্রহ্মপুত্রের নদী শাসন বাঁধ, কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সোলার প্লেট বসানো, দশটি বক্স ট্রান্সমিশনে সংযোগ প্রদান, সাব-স্টেশনসহ ১৩২ কেভিএ ট্রান্সমিশন টাওয়ার নির্মাণ,ময়মনসিংহ নগরির কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রীড লাইন পর্যন্ত চার কিলোমিটার আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল স্থাপন এবং এক কিলোমিটার ওভারহেড ট্রান্সমিশন সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ইকুইপমেন্ট টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের পর পরীক্ষামূলক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু এবং গ্রিডে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।
এইচডিএফসি সিনপাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক শেখ মো. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, সরকারের সব নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে চলমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় ও মেগা প্রকল্প। পরিবেশবান্ধব এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাথে জড়িত চীনা প্রকৌশলীরা জানুয়ারিতে বর্ষবরণ করতে দেশে যাওয়ার পর করোনাভাইরাসের কারণে তাদের ফিরতে দেরি হওয়ায় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে বিলম্বিত হয়। করোনা মহামারি না থাকলে আরও ৬ মাস আগেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হতো। সরকারের দেয়া বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন তিনি।
এমডব্লিউ/