আওয়ার ইসলাম: ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বামী নিয়ে দুই স্ত্রীর টানাটানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। প্রবাসী স্বামী মাইনুদ্দিন মিয়াজীকে নিয়ে দুই স্ত্রীর এ টানাটানি গণমাধ্যমে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট মালদ্বীপ ফেরত স্বামীকে দুই স্ত্রীই নিজের ঘরে নিতে রীতিমতো যুদ্ধে মেতেছিলেন। প্রবাসী মাইনুদ্দিন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের বাসরা গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল সোমবার বিকালে আলোচিত এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে অবশেষে ২য় স্ত্রী তমাই পেলেন স্বামীর অধিকার।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বাসরা গ্রামের মাইনুদ্দিন মিয়াজী পরিবারের চাকা সচল করতে ২০১০ সালে মালদ্বীপ যান। ২০১৪ সালে ছুটিতে বাড়িতে এসে একই উপজেলার টামটা গ্রামের সানজিদা আক্তারকে বিয়ে করেন।
এরই মাঝে তাদের ১টি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্ত্রী সানজিদা আক্তারের সঙ্গে মাইনুদ্দিনের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। কয়েক বছর যাবত স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছিল।
এরই মাঝে সানজিদা স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান নেন। পারিবারিক কলহের কারণে ২০১৮ সালে ওই প্রবাসী নারায়ণগঞ্জের মেয়ে তমাকে বিয়ে করেন। সে ঘরেও ১টি সন্তান জন্ম হয়। দুই স্ত্রীই বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিল। তবে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের কারণে তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না তার। ২য় স্ত্রীর সঙ্গেই চলছিল বেশি সখ্য।
গত ১৮ আগস্ট প্রবাসী মাইনুদ্দিন মালদ্বীপ থেকে দেশে আসছেন- প্রথম স্ত্রীর কাছে এমন আসে। তখন ২য় স্ত্রীর পাশাপাশি প্রথম স্ত্রী এসেও এয়ারপোর্টে অবস্থান নেয়। এ সময় এয়ারপোর্ট থেকে বের হওয়ার পর স্বামী নিয়ে দুই স্ত্রীই যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনীর দৃষ্টি গোচর হয়।
বিমানবন্দরে কর্মরত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা স্বামীসহ দুই স্ত্রীকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। পরে বিষয়টি সুরাহার অঙ্গীকার করে প্রবাসীকে জিম্মায় নিয়ে আসেন তারই চাচা আলী আহাম্মদ মিয়াজী।
সোমবার বিকালে এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রথম স্ত্রী সানজিদাকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা এবং সন্তানের নামে ৫ শতাংশ জায়গা লিখে দেয়াসহ সন্তানের মাসিক ভরণপোষণ বাবদ অর্থ প্রদান সাপেক্ষে তাকে ডিভোর্স দেয়া হয়। আর ২য় স্ত্রী তমাকে নিয়ে সংসার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন স্বামী মাইনুদ্দিন।
এ বিষয়ে ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, প্রবাসী মাইনুদ্দিনের চাচা আলী আহাম্মদ মিয়াজীর উদ্যোগে একটি শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মাইনুদ্দিনের বিরোধ এবং কলহ চরম আকার ধারণ করায় উভয়ের মতামতের ভিত্তিতেই তাদেরকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। আর ২য় স্ত্রীকে নিয়ে নিয়মিত সংসার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন মাইনুদ্দিন।
-এটি