আওয়ার ইসলাম: ইসলামী আন্দোলন বাংলদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, বাবরী মসজিদস্থলে রাম মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মোদী সরকার মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে। মোদী সরকার গায়ের জোরে মসজিদের জায়গা মন্দির নির্মাণ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী মোদি মুসলমানদের মসজিদস্থলে রাম মন্দির নির্মাণ করে ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কুঠারাঘাত করেছে। এতে করে মোদি নিজের পতনকে ত্বরান্বিত করেছে।
তিনি বলেন এর পরিণামে ভারত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হবে। বাবরী মসজিদ ছিল, আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ্।
ইউনুস আহমাদ বলেন, অযোধ্যায় ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাবরী মসজিদ ছিল এবং ১৯৯২ সালে অপরাধী জনতা মসজিদটিকে শহিদ করেছিল। তিনি বলেন, বাবরী মসজিদ পুন:নির্মাণে বিশ্বের মুসলিম জনতা প্রয়োজনে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
আজ ৫আগষ্ট, বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্তরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদস্থলে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংগঠনের সহকারি মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, যুবনেতা কেএম আতিকুর রহমান, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সেক্রেটারী জেনারেল হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান, উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন, নূরুল ইসলাম নাঈম, ডা. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, সৈয়দ ওমর ফারুক প্রমুখ।
মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর কী বাবরী মসজিদ ধ্বংস করা হয়নি? ইতিহাস স্মরণ রাখবে যে, ১৯৪৯ সালের ২২/২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে কী হয়েছিল যখন মসজিদের মধ্যে প্রতিমা রেখে দেওয়া হয়েছিল। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভূমিপুজা ও ভিত্তিপ্রস্তর দ্বারা প্রমাণিত হয়. এটা মন্দিরের জায়গা নয় বা এখানে পূর্বে মন্দির ছিল না। হিন্দুরীতি অনুযায়ী ভূমিপূজা একবারই হয়। মোদি মাত্রারিক্ত গো-মুত্র পান করে পাগল হয়ে গেছে। আল্লাহর দুশমনের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ হতে বাধ্য। তিনি বলেন, পীর সাহেব চরমোনাই নির্দেশ করলে ঈমানপ্রিয় জনতা বাবরী মসজিদ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, কসাই মোদি মুসলমানদের ধর্মীয় উপাসনালয়স্থলে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর করেনি বরং তাদের পতনের ভিত্তিস্থাপন করেছে। রামমন্দির একসময় আয়া সোফিয়ায় রূপ নিবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, মসজিদস্থলে রামমন্দির স্থাপনের প্রতিবাদ করে মুসলমানদের পক্ষে অবস্থান নিন। অন্যথায় হিন্দুপ্রেমিক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন। তিনি লেবাননে বিস্ফোরণ ঘটনায় শতাধিক মুসলিম নিহত ও হাজার হাজার আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন দাবি করেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল জাতীয় ক্লাব, কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় এসে সমাপ্ত হয়।
অন্যদিকে বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের প্রতিবাদে ময়মনসিংহ ইত্তেফাকুল উলামার মানববন্ধন।
ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী।
আজ (৫আগস্ট) বুধবার,বিকেল ৩টায় ইত্তেফাকুল উলামার কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুফতি আমীর ইবনে আহমদ সাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,আজ জোহরের নামাজের পর ময়মনসিংহের গাঙ্গিনাপাড়স্থ শাপলা স্কয়ারে ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রতিবাদে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলেমদের সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামার আয়োজনে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের অবৈধ অপপ্রয়াস হতে ভারত সরকারকে বিরত থাকতে হবে,অন্যথায় যে কোন পরিস্থিতির দায়ভার ভারত সরকারকেই বহন করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন,আজ অন্যায় ভাবে বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ইতিহাসের একটি কলঙ্কময় অধ্যায়ের সৃষ্টি করলো ভারত সরকার,যেটা মুসলমানদের জন্য কখনই সহ্য করার মতো নয়,যেখানে ভারতের হাই কোর্ট প্রমাণের অভাবে এটা মসজিদের জায়গা বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলো,শুধু রামের জন্মস্থান বলে রাম মন্দিরের পক্ষে রায় দিয়েছিলো কোর্ট,এটা কতটুকু ন্যায়সঙ্গত রায়। আমরা ইত্তেফাকের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি,ইনশাআল্লাহ সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়,যেদিন যেই স্থানে আজ রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে সেই স্থানে একদিন মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে,ইতিহাস এমনটাই বলে।
মানববন্ধনে ইত্তেফাকুল উলামার মজলিসে আমেলার সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ্ সা'দীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন,ইত্তেফাকুল উলামার কার্যকরী কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মুহিব্বুল্লাহ্,জেলা শাখার সম্পাদক মাওলানা মঞ্জুরুল হক,কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মুফতি আমীর ইবনে আহমাদ,মাওলানা মুহাম্মাদ,আল্লামা শাহ মোশাররফ হোসেন,মাওলানা নূরুল আবসার মাসুম,মাওলানা সাইদুল ইসলাম,মুফতি নুরুজ্জামান,মুফতি নজরুল ইসলাম,মুফতি শরিফুর রহমান,মাওলানা মানযীর আহসান খাঁন তাবশীর,মাওলানা সাদিকুর রহমান রাশেদ,মাওলানা চৌধুরী নাসীর আহমাদ প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও অমুসলিমদের হিদায়াত,এবং ময়মনসিংহের সুযোগ্য জেলা প্রসাসক মো.মিজানুর রহমান করোনায় আক্রান্ত সহ আরো যারা করোনায় আক্রান্ত সেই সকল রুগিদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়,দোয়া পরিচালনা করেন আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ্ সা'দী।
-এটি