মুসা আল হাফিজ ।।
আপনি ষাট বছর ধরে হাদীস পড়ালেন, করলেন তাফসির,গড়লেন অগণিত সোনার মানুষ, আপনারই ছাত্র হযরত গিয়াস উদ্দিন বালিয়া রহ. থেকে নিয়ে হযরত নুর হোসাইন কাসেমি।
আপনার উস্তাদ আবদুল্লাহ দরখাস্তি, শায়খুল হাদিস যাকারিয়া, ইদ্রিস কান্দালভি, ইউসুফ বানূরি, ইব্রাহীম বলয়াভি, রাসুল খান, ফজলুর রহমান মুরাদাবাদী থেকে নিয়ে আলমে ইসলামীর মহান মনীষীরা, ছাত্র অবস্থায় আল্লামা আবুল হাসান যার হাত দিয়ে লেখান তার 'তানযিমুল আশতাত' এর প্রধান অংশ, আল্লামা ফয়জুল্লাহ রহ. যাকে দিয়ে লেখান ' ইকতেনাসুশ শাওয়ারিদ' আল্লামা রাসুল খান যাকে জামেয়া আশরাফিয়া লাহোরে নিয়োগ দেন উস্তাদ হিসেবে, হাফিজুল হাদিস যাকে দেন বাংলাদেশে তাফসীর এর প্রচার - প্রসারের যিম্মা, যার তাফসির ভালোবাসতেন মদনী- বাইয়মপুরি, যার দারসে হাদীসে স্বয়ং হুজুরকে সা. উপস্থিত দেখেছেন স্বপ্নযোগে অনেকেই!
আপনি কী? তা তো বুঝানো হয়েছে বার বার অলৌকিক আয়োজনে। কিন্তু হায়, আমরা বুঝলাম না! কত ইশারা দেয়া হলো, এমনকি দরবারে রেসালত থেকে আপনার নাম উল্লেখ করেও আপনাকে চিনিয়ে দেয়া হলো। কিন্তু আমরা চিনলাম না!
একটি ঘটনার সাক্ষি তো মারকাজুদ দাওয়ার শায়খ আবদুল মালিক (দা.বা. ।তিনি জানেন, মারকাজের জায়গার জন্য রাজশাহীর এক ছাত্রের দেখা স্বপ্নের ঘটনা। যে ছাত্রকে সরওয়ারে কায়েনাত নির্দেশ দেন ' তফাজ্জুল হক নামে এক মুহাদ্দিস আছেন। তাকে এনে দুয়া করানো হলে মারকাজের জায়গার সুব্যবস্থা হয়ে যাবে।' তারপর তো তাই হলো!
এমন কতো ইশারা, কতো বলে দেয়া, কিন্তু আমরা শুনলাম না! আমরা আপনাকে চিনলাম না! আপনার ইন্তেকালকে লোকেরা বড় এক আলেমের ইন্তেকালের ঘটনা হিসেবেই দেখবে, শোক করবে ক'দিন। কিন্তু আপনার বেদনাদীর্ণ হৃদয়ের রোদন আমি শুনেছি। দেখেছি, কত কত মহানদীর স্রোত এসে মিলিত হয়েছিলো আপনার সত্তায়! কিন্তু এই হীনতা, সুবিধাবাদিতা, আত্মপুজা ও রং বদলাবার মচ্ছবে কার এমন দরকার ছিলো আপনার আসল বিশালতাকে জানবে? প্রকৃত আপনাকে চিনবে।
লেখক : কবি ও গবেষক
আরএম/