আওয়ার ইসলাম: নামের মিল থাকায় আসামি না হয়েও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার উদিয়ারপাড়ার (স্কুল পাড়া) সিরাজুল হকের ছেলে জামসু মিয়া। গত ৮ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
রোববার আসামির উপস্থিতিতে ঢাকা সিএমএম আদালতে শুনানি হলেও তার কারামুক্ত হয়নি।
তবে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ১০ কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জানা যায়, ঢাকা সিএমএম আদালতে ২০১৫ সালের ১১ জুন মানহুরা খাতুন (২৬) তার স্বামী কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার মুহা. সিরাজ মিয়ার ছেলে মুহা. জামসু মিয়ার (সাগর) বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে সিআর ২১৯/২০১৫ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি গত ১ মার্চ থেকে পলাতক।
ওই মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামির অনুপস্থিতিতে এক বছর তিন মাসের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। রায়ের সময় আসামি পলাতক থাকায় আদালত আসামির স্থায়ী ঠিকানার ইটনা থানায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে একটি সাজা পরোয়ানা জারি করেন।
ইটনা থানায় ওই পরোয়ানা পৌঁছানোর পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ জামান গত ২৫ জুলাই ওই থানার এসআই শামছুল হাবিবকে গ্রেপ্তারের দায়িত্ব দেন। গত ৭ আগস্ট ইটনা থানার সিরাজুল হকের ছেলে জামসু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন কিশোরগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হলে তাকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ আগস্ট রায় প্রদাণকারী আদালতে ভুক্তভোগীর আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ ভুল আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়ে জামিনের আবেদন করেন। মহানগর হাকিম মিল্লাত হোসেন বিষয়টি নিয়ে ২৫ আগস্ট শুনানির দিন ঠিক করেন। কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে জামসুকে আনা হয় ঢাকায়।
শুনানিতে আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ ভুল আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে মুহা. জামসু মিয়ার জামিনের আদেশ প্রার্থনা করেন। শুনানির ওই সময় সাজা হওয়া আসামি মুহা. জামসু মিয়ার (সাগর) আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহান শেখুনও বিষয়টি সত্য বলে আদালতকে জানান।
বিচারক মুহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামি ভিন্ন ব্যক্তি কি না সে বিষয়ে তদন্ত করে ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়ে জামিন নামঞ্জুর করেন।
এ সম্পর্কে ভুক্তভোগীর আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ বলেন, গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে ভুলের বিষয়টি বলা হলেও পুলিশ তাকে ছাড়েনি বা তদন্ত করেও দেখেনি। এ কারণেই একজন নিরাপরাধ মানুষ ৮ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত আসামি বর্তমানে জর্ডানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ সম্পর্কে প্রকৃত আসামি মুহা. জামসু মিয়ার (সাগর) আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহান শেখুন বলেন, আমার মামলার আসামিকে আমি চিনি। যে আসামিকে পুলিশ ধরে এনেছে সে ওই আসামি নয়। আমি শুনানির সময়ও আদালতকে এ কথা বলেছি।
-এএ