আওয়ার ইসলাম: সারাদেশে সব নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করতে থানা ও জেলা পর্যায়ে স্থায়ী ভাবে মজুদ করা হচ্ছে ইভিএম। ফলে আগামীতে থাকছে না ব্যালটের ব্যবহার।
সূত্র মতে, বিএনপিসহ আধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইসির সঙ্গে সংলাপে ইভিএমের বিরোধিতা করলেও তা আমলে নেয়নি ইসি। আগামী সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ব্যালটের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ কারণে দেশের নির্বাচনগুলোতে বর্তমানে যে ব্যালট পেপার ব্যবহার হয়, তা আর ব্যবহার করা হবে না। প্রতিবেশী দেশ ভারতের মতো বাংলাদেশের সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
ইসিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা যায়। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠিত চারটি কমিটির সুপারিশ থেকে সাতটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো ১. ইভিএমগুলো মাঠপর্যায়ে সব উপজেলা জেলা নির্বাচন অফিসে মজুত রাখা হবে। যাতে সব নির্বাচনে এসব ইভিএম ব্যবহার করা যায়। ২. মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোতে অপ্রয়োজনীয় নির্বাচনি কাগজপত্রসহ সব কাগজ অপসারণ করতে হবে।
প্রয়োজনে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। ৩. বিএমটিএফ থেকে র্যাক সংগ্রহ করে এবং দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করে ইভিএমগুলোকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের জন্য ইসি সচিবকে প্রস্তাব দিতে হবে। ৫. ইভিএমগুলোকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য নতুন প্রকল্প নিতে হবে।
৬. ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দুইজন করে সদস্য এবং প্রতি ৫ কেন্দ্রের জন্য ইভিএমের জন্য অধিক কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন একজন সদস্য ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে সহায়তা করবে।
৭. ইভিএম সংরক্ষণ ও পরিচালনার জন্য স্কুল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।
এর আগে ইসির ৪৭তম কমিশন বৈঠকে, সংসদ, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পৌরসভা ও ইউপি বিধিমালায় ইভিএম যুক্ত করা হয়। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে সারা দেশে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
প্রায় ৩০০ পৌরসভার সব কয়টিতে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি পরে ইউপি নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার হবে।
এ কমিশনের সময়ে আর সংসদ নির্বাচন না থাকলেও আগামীতে যে কমিশন আসবে তারাও যাতে সহজে সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করতে পারে সে প্রস্তুতি রেখে যাবে বর্তমান কমিশন।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগসহ কিছু দল ইভিএমে ভোগ্রহণ চাইলেও বিএনপিসহ বেশ কিছু দল যন্ত্রটির ব্যবহার চায় না। বিএনপিসহ অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সব ধরনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছে। কিন্তু ইসি তাদের কথায় পাত্তা না দিয়ে আগামী সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিল।
এসব বিষয়ে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে ইভিএম থেকে ফিরে আসছে আমরা কেন এটার পিছনে ঝুঁকছি আমার বোধগম্য নয়। ইভিএমে অনেক কারচুপি হতে পারে বলে জনগণের মনে সংশয় আরও বাড়বে।
-এটি